কথা বলছেন না মামুনুল হক!
কারামুক্তির পর কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। সাংগঠনিক সভা-সমাবেশেরও বক্তৃতা সীমিত করেছেন। আর গণমাধ্যমকে এড়িয়েই চলছেন ধর্মভিত্তিক এই রাজনীতিক। মামুনুল হকের ব্যক্তিগত মোবাইলে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
হেফাজতে ইসলাম এবং খেলাফত মজলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কারাগার থেকে জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি অসুস্থ। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কড়া নজরদারিতে রেখেছে মামুনুলের ওপর। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কার সাথে কথা বলছেন, কী কথা বলছেন-এসব বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে। ফলে কারামুক্ত হওয়ার পর প্রথম দু’দিন দলের এবং সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ, আলাপ-আলোচনা করলেও এখন থেমে গেছেন।
খেলাফত মজলিশের যুগ্ম-মহাসচিব এবং হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীন দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, মামুনুল হক এখনো তার ব্যক্তিগত মোবাইল সিমটি তুলতে পারেননি। আর শারীরিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ। সবার সাথেই কথা কম বলছেন।
হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তদাতা পর্যায়ের এক নেতা জানান, মামুনুল হককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেও, কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। আর অপ্রদর্শিত অনেক শর্তের বেড়াজালেও তাকে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে চাইলেও মামুনুল হক কোনো কথা বলতে পারছেন না।
চলতি বছরের ৩ মে সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিপান মাওলানা মামুনুল হক। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৩৭টি মামলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক। ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন মামুনুল হক। এরপর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে এসব মামলায় কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক।