এই মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সবচেয়ে জরুরি: মির্জা ফখরুল
দেশের সার্বভৌমত্ব আজকে হুমকির সম্মুখীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংহতি মিলনায়তনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে বড় একটা সংকটের মধ্যে। একদিকে গণতন্ত্র নেই, অন্যদিকে দেশের যে সার্বভৌমত্ব, সেই সার্বভৌমত্ব আজকে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এখন যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, যেটা আমরা মনে করছি- গণতন্ত্রের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, যিনি এখনো আটক অবস্থায় আছেন, যিনি জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই ও সংগ্রাম করছেন, সেই নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার একটা আন্দোলন করা জরুরি। এটাকে আমি আলাদা করে দেখতে চাই না। গণতন্ত্রের আন্দোলনের সঙ্গে এটা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। আজ আমাদের একটা কর্মসূচি আছে। তার মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। অতি শিগগিরই তার মুক্তির জন্য আমরা যারা একসঙ্গে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই ভয়রাবহ ফ্যাসিস্টকে সরিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করার জন্য আমরা সফল হবো।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রেক্ষাপট তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের শাসকগোষ্ঠী কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি। তাদের কারণেই আজকে সেটা প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হয়েছে। আবারও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশকে ফের অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঢেলে দেয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া এখনো চলছে। এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে এসে পেীঁছেছে, যেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমরা বড় রাজনৈতিক দলগুলো এক মঞ্চে উঠতে না পারলেও যুগপৎভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্তকে আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হবে না। আমরা এই আন্দোলনে অবশ্যই সফল হবো। জনগণের পক্ষে, সত্যের পক্ষে এবং ন্যায়ের পক্ষে এবং রাষ্ট্র ও সমাজকে রক্ষা করার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সমমনা জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সচিব কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ঈমন প্রমুখ।