ধাপে ধাপে আসবে আরও কর্মসূচি

ফাইল ছবি

দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৯ জুন) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে নামছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ধাপে ধাপে নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে দলটি। তবে তার আগে অবিলম্বে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং দলটির যুব সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা দরকার। 

গত বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভা করেন। সভা শেষে দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৯ জুন বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, ১ জুলাই সারাদেশের মহানগরগুলোতে এবং ৩ জুলাই জেলা সদরগুলোতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে। এই আন্দোলনকে আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।’ 

ধাপে ধাপে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকার বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, ‘ঈদের আগে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি। শিগগিরই আমরা সবাই মিলে রাজপথে নামবো। তার আগে আমরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করবো। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কর্মসূচি আসবে।’ 

এদিকে, আজ শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘বেলা ২ টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে আমরা সমাবেশের জন্য চিঠি পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে প্রেরণ করেছি। বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে। সমাবেশ সফল করার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে সমন্বয়ক করে পর্যায়ক্রমে নানা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সমাবেশ সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি আগামীকাল একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।’

এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশে ঢাকাবাসীসহ দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

কর্মসূচির বিষয়ে দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর নয়াপল্টনে বড় ধরনের সমাবেশ আমরা করতে যাচ্ছি। ইতিপূর্বে ডিএমপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। আশা করছি তারা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে। এটা যেহেতু কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচি সেহেতু ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করলেও থানা ও ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।’  

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও বিলুপ্ত ঘোষিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল সালাম বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার সুযোগ দিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি চেয়ারপারসন অসুস্থ হয়ে পড়লে গভীর রাতে ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্স ও ইনজেকশন চাওয়া হলে তারা দেয়নি। আমরা মনে করি সরকারের ভয়ে তারা এ কাজ করেছে। এ অবস্থায় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে আমরা সমাবেশ করতে যাচ্ছি।’ 
  
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বক্তব্য রাখবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় ঢাকা মহানগর বিএনপি এবং ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের। এর মধ্যে ঈদের আগে মহানগর ও যুবদল কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এখন তার নেতৃত্ব মহানগর ও যুবদল নেতারা আন্দোলন সংগ্রাম করবেন। তাই অতিদ্রুত কমিটিগুলো ঘোষণা করা দরকার।’