ঐক্য গড়ে আন্দোলন বেগবান করতে হবে: মির্জা ফখরুল

সরকার দেশকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ঐক্য গড়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বেগবান করতে হবে।’

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি, আওয়ামী লীগ যখন আগেও ক্ষমতায় ছিলে ১৯৭১ সালে থেকে ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে তখনও তারা একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। আর আজকে ভিন্ন চেহারাতে একটু ছদ্মবেশ ধারণ করে গণতন্ত্রের কথা বলে তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য করে দেখুন এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে গিয়ে তারা নির্বাচনকে ধবংস করেছে, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে পুরো দলীয়করণ করেছে… এমন কোনো  গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বাকি নেই যে প্রতিষ্ঠানগুলো তারা ধ্বংস করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ রসাতল যাচ্ছে… এই আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে বাংলাদেশ ততই আরও দ্রুত রসাতলে যাবে। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে না, আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না, আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে, এমন একটা বিষয় নেই যা ধ্বংস হয়ে যায়নি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের এখন যেটা দরকার সকলের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করা, আরও শক্তিশালী করা এবং রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করা।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আলাদা করে দেখার কোনো কারণ নেই। দেশনেত্রীর মুক্তি, এই দেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি। সব কিছুর মূলে একটা আছে সেটা আওয়ামী লীগ… এই আওয়ামী লীগকে যদি আমরা সরাতে পারি তাহলে সব বিষয়গুলো আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবো। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করি। ইনশাল্লাহ, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। কেউ আমাদেরকে পরাজিত করতে পারবে না।’

এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপিসহ যুব দলের নবগঠিত নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করব, ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটির নেতৃত্বে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে এবং এই সরকারকে পরাজিত করতে ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশনেত্রীর মুক্তি ছাড়া এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক মুক্তি হবে না। দেশে মানুষের কোনো কথাই সরকার কর্ণপাত করছে না। তারা তাদের মতো করে চলছে, তাদের মতো করে কথা বলছে। জনগণের কথা তারা বুঝে না। আমরা তাদের ভাষা বুঝতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলায় কথা বলি, আমরা বাংলার মানুষ, সব সময় আমরা প্রতিবাদে বিশ্বাসী, পরাধীনতায় বিশ্বাসী নই; এই কথাটা সকলকে মনে রাখতে হবে। নিজেকে স্বাধীন ও মুক্ত রাখার জন্য, দেশকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাখার জন্য আমি আজকে সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের মাওলানা ভাসানী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়। পরে মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা কাজী সেলিম রেজা।

এসম বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ ‍উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুব দলের নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করীম পল, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।