ড. মুহাম্মাদ ইউনুস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন: ওবায়দুল কাদের

ড. মুহাম্মাদ ইউনুস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আগে ইউনুস গোপনে ষড়যন্ত্র করেছেন এবার প্রকাশ্যে এসেছেন। আজ রবিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক দল খুলে ইউনুস ওয়ান ইলেভেনে সাড়া পাননি। যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান। যিনি পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন। তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন। বাইরে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। আমাদের বিবেক আমাদের চালাই। কোনো বিদেশি শক্তি নয়।

তিনি বলেন, আজ ইউনূস কত নির্লজ্জ, তিনি ভারতকে অনুরোধ করে শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আমক্রণকারী নয়। তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন। বিবৃতি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপের জন্য বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান ড. ইউনূস। তিনি সাক্ষাৎকারে নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে থামাতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানানোর বক্তব্য আপত্তিকর বলেও উল্লেখ করে কাদের বলেন, এই দেশ স্বাধীন। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো! কি বোঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন। খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কি?

ড. ইউনূস দেশের সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা লালন করেন না বলে জানিয়ে কাদের বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। আমরা তার সঙ্গে কেমন করে থাকবো। জাতির কোনো সংকট, সম্ভাবনায় তার ভূমিকা দেশের জনগণ দেখে না।

কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, ওই রাতে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল। বিএনপির নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ওই রাতে ছিল। যদি কারফিউ জারি না হতো এমন প্ল্যান তাদের ছিল। শ্রীলঙ্কান স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা, অভ্যুত্থানের ওপর রাইড করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করত। এটাই তো তাদের পরিকল্পনা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী অপশক্তি নিয়ে নতুন প্ল্যাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে দোসররা সাড়া দেবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজও সেদিকে অনুসরণ করবে; এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে তাদের ঐক্য আগুন সন্ত্রাসের ঐক্য। দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।

চলমান সহিংসতা নিয়ে বিদেশিদের বিবৃতি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বিদেশ থেকে অনেকেই বিবৃতি দিচ্ছেন। অনেক সংস্থা, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন। কারা সমন্বয় করছেন আমরা জানি। তাদের বলবো কারও প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি’র ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে তা দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিবৃতিযুদ্ধ চলছে দেশে-বিদেশে। যেখানে ওয়ান/ ইলেভেনের কুশীলব ড. ইউনূসও যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী না। এখন বিবৃতি আসছে আক্রান্তদের বিরুদ্ধে। আক্রমণকারী আমরা নয়।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।