হত্যার দায় স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দের

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংগঠিত সকল হত্যার দায় স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ। আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গণহত্যাকারী সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগসহ বিবৃতিতে যে ৬ দফা দাবি জানানো হয় সেগুলো হলো-১. নিরাপত্তা দেবার অজুহাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের দফায় দফায় জোর করে তুলে নেয়া বন্ধ করতে হবে এবং তাদের অনতিবিলম্বে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। ২. ছাত্র-জনতা ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীসহ সকলের উপর হওয়া হামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত ও গুমকৃতদের মুক্তি দিতে হবে এবং সকল মামলা প্রত্যাহার করা। ৩। অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা মেনে নেওয়া। ৪। কারফিউ প্রত্যাহার ও পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ সকল বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু করতে হবে। ৫. আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর হামলা, গুলি, হত্যার পরিকল্পনাকারি, নির্দেশদাতা ও বাস্তাবায়কারীদের বিচারের আওতায় আনা।

বিবৃতিতে শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের অপপ্রয়াসের পর সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে ব্লক রেইডের নামে হানাদার বাহিনীর কায়দায় চিরুনি অভিযান এবং শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করার পরও দফায় দফায় ছাত্রনেতাদের তুলে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান জাতীয় নেতৃবৃন্দ। 

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আগেরদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ককে তুলে নেয়ার পরে গত শনিবার রাতে আবারও আরও ২ সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক আরিফ সোহেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুমকে তুলে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে তাদের সকলকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ ব্লক রেইডের নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কায়দায় রাতের গভীরে চিরুনি অভিযান চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের আটক করা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান। 

যুক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ এলডিপি’র সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্ণেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান,গণঅধিকার পরিষদের সেক্রেটারি রাশেদ খান প্রমূখ।