গণআন্দোলনেই সরকারের পতন ঘটবে

সরকার বরাবরের মতই ছাত্র-ছাত্রীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকেও রাজনৈতিক রং দিতে চেয়েছিলো। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে বিএনপি জামায়াতের আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা এক্ষত্রে সফল হতে পারেনি। বরং ভুল করছে। এই ভুলের খেসারত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। কারণ কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীদের চলমান আন্দোলন শিগগিরই গণআন্দোলনে পরিণত হবে। সেই গণআন্দোলনে সরকারের পতন হবে। এমনটা মনে করছেন বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।

তারা বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তার মানে এই নয় যে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে কিংবা রাজপথে ছিলো। বিএনপি রাজপথে ছিলো না তার প্রমাণ এখন স্পষ্ট। কারণ রাজপথে পুলিশের গুলিতে বিএনপির কেউ মারা যায়নি। এমনকি জামায়াতে ইসলামী কিংবা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরাও মারা যায়নি। মারা গেছে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ।

সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রী-নেতারা বারবার বলছেন প্রকৃত সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রকৃত অপরাধীদের না খুঁজে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের দমনে উঠেপড়ে লেগেছে সরকার।'

দেশব্যাপী নিরীহ ছাত্র-জনতা এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার-নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, 'নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ভয়-ভীতির কারণে দেশব্যাপী সরকারের নির্মম ও নির্দয় অত্যাচার এবং নিপীড়নের সব তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্নভাবে যেসব তথ্য আসছে সেগুলো রীতিমতো লোমহর্ষক এবং মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।'

তিনি বলেন, 'সাধারণ ছাত্র-জনতাকে এবং একইসঙ্গে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মী- সমর্থকদের দিনে-রাতে ব্লকরেইড দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অনেককে তুলে নিয়ে গেলেও তাদের খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। আটক করার পর, রিমান্ডে, এমনকি কারাগারে আটককৃতদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। শিক্ষার্থী বা নেতাকর্মীদের আটক করতে বাসাবাড়িতে অভিযানের নামে পরিবারের সদস্যদের সাথে অশালীন আচরণ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হচ্ছে।'

গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘সরকার অতীতে পড়ে আছে। তারা মনে করছে অতীতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে পার পেয়ে গেছে। এবারও পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। এবারের আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করছে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। অতীতে বিশেষ করে ’৫২, ’৬৯ কিংবা ’৯০. স্বৈরাচারী সরকারগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন নস্যাৎ করতে পারেনি। এখনও পারবে না। বর্তমানে দলমত শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সবাই যখন এক হয়েছে তখন আর সরকারের সামনে কোনো পথ খোলা থাকবে না। এবার সরকারকে বিদায় নিতে হবে।