খালেদা জিয়াকে নেওয়া হতে পারে আমেরিকায়

ফাইল ছবি

সদ্য মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় নেওয়া হতে পারে। বুধবার এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার এক স্বজন। তিনি বলেন, এর আগে তার লিভার ইন্টারভেনশন করেছিলেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। তাই লিভারের পরবর্তী চিকিৎসা সেখানেই ভালো হবে। 

গত বছরের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল লিভারসিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিআইপিএস) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ওইদিন বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে চিকিৎসা শুরু করেন এবং ৭টা ৩৭ মিনিটে এ প্রক্রিয়া শেষ হয়।

দেশের বাইরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অনুমতি না পাওয়ায় মার্কিন চিকিৎসক জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিল্টন, হামিদ আহমেদ আবদুর রব ও ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস বাংলাদেশে আসেন।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আথ্রাাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এর আগে, দীর্ঘ সাড়ে ৬ বছর পর গত মঙ্গলবার মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন। এদিন  রাষ্ট্রপতির উপ প্রেস সচিব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর নেওয়া সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বিভিন্ন মামলায় আটককৃতদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়েছে এবং ইতিমধ্যে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন। এর আগে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বৈঠকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। 

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা হয়। ওইদিনই তাকে পুরান ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে। ২৫ মাসের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারীর সময় মানবিক বিবেচনায় সরকারের নির্বাহী আদেশে দুই শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা ৬ মাস স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছিল রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না এবং দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে।