নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর বার্তা বিএনপির

প্রতীকী ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর, বাসা-বাড়িতে ডাকাতি, হামলা-লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় বিএনপি জড়িত বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিযোগ করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে সতর্ক বিএনপি। এছাড়া সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে যুবদলের কয়েক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুনদের দলে যোগদান না করানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি হামলা, দখলের ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকে ধরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কেউ প্রতিহিংসায় লিপ্ত হবেন না, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।’

তিনি বলেন, ‘শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার গৌরবকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র আবার শুরু হয়ে গেছে। চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে, সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান শক্ত হাতে প্রতিটি হাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ধর্ম, বর্ণ, কিংবা ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, বিশ্বাস যাই হোক না কেন, নিরাপত্তায় আপনি ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।’

এ সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা আজ থেকে বন্ধ করুন। এমনকি বিএনপি নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করতে চাইলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিন। পুলিশের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে যথানিয়মে অভিযোগ করুন। কেউ দয়া করে নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। প্রতিহিংসায় লিপ্ত হবেন না।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছি পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসররা পরিকল্পিতভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তথা বিজয়ী ছাত্র জনতার ওপর প্রতিশোধের নীল নকশা নিয়ে মাঠে নেমেছে। একই সঙ্গে এসব ঘৃণ্য অপরাধের দায় সুকৌশলে বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির ওপর চাপানোর জন্য সামাজিক গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছে ব্যাপকভাবে। বিশেষ করে প্রতিবেশী একটি দেশের কিছু কিছু নিউজ চ্যানেলসহ সোশ্যা মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবহার করছে একটি চিহ্নিত মহল। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নাগরিকদের সম্পদ ও ধর্মীয় উপসানালয়কে টার্গেট করা হয়েছে বিশেষভাবে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার লক্ষ্যে সমাজকে বিভক্ত করাই এই মুহূর্তে তাদের ষড়যন্ত্র। বিজয়ী সকল শক্তি তথা জনগণের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার অপচেষ্টায়ও তারা মরিয়া হয়ে লেগেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, প্রশাসন তথা সর্বস্তরের সকল নাগরিকবৃন্দ এ বিষয়ে সজাগ আছেন। আমাদের দল বিএনপি ইতিমধ্যে আমাদের সাধ্যমত সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলছে। দলের নাম ব্যবহার করে যারাই এই ধরনের অপতৎপরতায় জড়িয়ে পড়বে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’