ভারতের সাথে হাসিনা সরকারের সকল গোপন চুক্তি বাতিলের দাবি রিজভীর
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনা সরকার বিগত ১৫ বছরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে যে সমস্ত গোপন চুক্তি করেছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের এক অভিনেত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন, একটা দেশ ছিল ভারতের পক্ষে, সেটাও হাতছাড়া হয়ে গেছে। একটা দেশ ছিল না, একজন ব্যক্তি ছিল ভারতের পক্ষে। কারণ ওই ব্যক্তি এ দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এই দেশে একচেটিয়া ভোট করে নিজেদের লোককে ভোট ছাড়া এমপি বানিয়েছে। যে শেখ হাসিনা এই দেশের গণতন্ত্রকে কবরস্থানে পাঠিয়েছে, সেই শেখ হাসিনাকে ভারত সমর্থন করে, বাংলাদেশকে সমর্থন করে না। বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করে না।’
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে কাফরুল থানা বিএনপির উদ্যোগে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা এখন আফসোস করছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘এখন তারা আফসোস করছেন। খুবই আফসোস করছেন। আওয়ামী লীগকে এখন মানুষ বলছে আফসোসলীগ। এ দেশের মানুষের সহায় সম্পদ লুট করার তাদের যে প্রবণতা, ওইটা যুবলীগ-ছাত্রলীগ এখন করতে পারছে না। তাই তারা আফসোস করছে।’
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি ভদ্রলোকদের দল। বিএনপি জনগণের দল। বিএনপির দেশের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের দল। বিএনপি গুন্ডা পাণ্ডাদের দল না, বিএনপি সন্ত্রাসীদের দল না। বিএনপি বিগত ১৫ বছরে সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছে। বিএনপি নেতারা বছরের পর বছর গুম হয়ে থেকেছে, তারপরও আমরা গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে মনুষ্যত্ব নেই। তার শরীরে মানুষের কোন রক্ত নেই। রক্ত পান করে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। রাস্তার মধ্যে লাশ ফেলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। সে তরুণ হোক, ছাত্র হোক, যুবক হোক, শ্রমজীবী মানুষ হোক, সর্বশেষ শিশু কিশোরদের হত্যা করে সে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি বিশ্বাস করে, দেশ নায়ক তারেক রহমানের আদর্শকে বিশ্বাস করে, তাদেরকে এই সমাজের শান্তির শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কয়েকদিন আগেই বলেছেন, আমরা শান্তির সমাজ নির্মাণ করতে চাই, আমরা শান্তির সমাজ তৈরি করব। শেখ হাসিনা যে সমস্ত তৈরি করেছিলেন, বাড়ি দখল, ঘর দখল, গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে যাওয়া, এইটাই ছিল শেখ হাসিনার ১৫ বছরের আওয়ামী সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি বিএনপি পুনরাবৃত্তি করবে না।’
প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। তারা কি জানেন না গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণকে কি পরিমাণ অত্যাচার করেছে। তারা কি জানেন না ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এর ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছে। তারপরও শেখ হাসিনার প্রতি আপনাদের এত দরদ কেন? আপনারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে চান না? আপনারা কি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার গুরুত্ব দিতে চান না?’
আকরাম হোসেনের বাবুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, মাহবুবুল ইসলাম, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন আকিল, মেহেবুব মাসুম শান্ত, জাকির হোসেন, তালুকদার রুমীসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। পরে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে হতাহতের পরিবারের মাঝে অনুদান তুলে দেন।