নির্বাচন দিতে বেশি সময় নেওয়া উচিত নয়: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উপযুক্ত সময় দেওয়া উচিত।

‘এটি খুব দীর্ঘ বা খুব কমও হওয়া উচিত নয়’ উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামতের জন্য তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) যুক্তিসঙ্গত সময় পাওয়া উচিত।’

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঢাকার মগবাজারের একটি কার্যালয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কর্মরত কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন শফিকুর রহমান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ বাহিনী, প্রশাসনসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে এগুলো ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই এ বিষয়ে (নির্বাচন) ধৈর্য ধারণ করি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়া উচিত হয়নি। এটা একজন রাজনীতিবিদের জন্য শোভনীয় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) দেশ ছেড়ে না গেলে ভালো হতো। গণভবনে জনতা উপচে না পড়লেও ভালো হতো।’

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তিনি একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে রওনা হওয়ার পরপরই হাজার হাজার মানুষ তার সরকারি বাসভবন, গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে এবং অনেককে সেখানে যা পেয়েছে লুটপাট করতে দেখা গেছে।

সোমবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের (আইভিএসি) ভেতরে যে বিক্ষোভ হয়েছে তা ‘সাংঘর্ষিক’ বলে নিন্দা জানান জামায়াত আমির।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হয় না সুস্থ মনের কোনো মানুষ এটা করতে পারে। যারা এই কাজ করেছেন, তাদের ক্ষমা করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে কোনো দেশের দালাল হিসেবে ট্যাগ দিতে পছন্দ করি না। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।’

সীমান্তবর্তী ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর বাঁধ দিয়ে ভারতের পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ করে ফেনী ও কুমিল্লায় চলমান ভয়াবহ বন্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটাই একমাত্র কারণ নয়।’

তিনি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার জন্য তিনটি বিষয়কে দায়ী করেছেন- অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, হঠাৎ করে বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়া এবং ভারতের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতার অভাব। তিনি বলেন, বোঝাই যাচ্ছে, পানি ছাড়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু ভারত নিম্ন অববাহিকার বাংলাদেশকে আগেই সতর্ক করতে পারত। প্রতিবেশীদের একে অপরকে সাহায্য করতে হবে।

শফিকুর রহমান বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে তার দলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তার দলের নেতাকর্মীরা কীভাবে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ হিন্দু মন্দিরগুলো পাহারা দিয়েছে তার বর্ণনা দেন তিনি।

সম্প্রতি মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা বলব না যে কিছুই হয়নি। একই সঙ্গে বলতে হবে অতিরঞ্জন হয়েছে।’