ইচ্ছে করলেই অপশক্তি এ দেশের ইসলামী মূল্যবোধ উপড়ে ফেলতে পারবে না

ইচ্ছে করলেই অপশক্তি এ দেশের ইসলামী মূল্যবোধ উপড়ে ফেলতে পারবে না

ইচ্ছে করলেই অপশক্তি এ দেশের ইসলামী মূল্যবোধ উপড়ে ফেলতে পারবে না। নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরেই বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে বলে মত দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, অন্যের সংস্কৃতি অনুসরণ করে জাতি কখনই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হতে পারে না। ইচ্ছে করলেই কোনো অপশক্তি এ দেশের ইসলামী মূল্যবোধ উপড়ে ফেলতে পারবে না।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট আয়োজিত কবি, লেখক ও শিল্পী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিশ্বাসের প্রকাশ হচ্ছে সংস্কৃতি। অতএব সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে বিশ্বাস নয় আবার আমার বিশ্বাসকে দূরে রেখে সংস্কৃতি নয়। যারা নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতি ভুলে অন্যেরটা অনুসরণ করে তারা কোনো সময় অগ্রসর হতে পারে না৷ আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন জাতি হতে পারে না এবং তারা দেশ জাতিকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়। তাই আমাদের নিজস্ব বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও শিকড়কে আঁকড়ে ধরে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে আমাদের বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই আমাদের সংস্কৃতি আবর্তিত। আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের উন্মুক্ত আবাসভূমি। একটি বৈচিত্রময় মেলবন্ধন এদেশে রয়েছে। এখানে আমরা সকলেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনেও আমরা দেখেছি কোনো দুষ্টচক্র এই সম্প্রীতির বন্ধনকে নষ্ট করেতে না পারে সেজন্য দেশের সব মন্দির, চার্চ, গির্জাগুলো মাদরাসার মুসলিম ছাত্ররা দিন রাত পাহারা দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে। 

তিনি বলেন, কিছু দুষ্কৃতিকারী অপরাধ সংঘটিত করে বৃহৎ গোষ্ঠীর ওপরে দোষ চাপিয়ে দিতে চায়, সেই সব সন্ত্রাসীদের মোকাবিলায় সংস্কৃতিকভাবে আমাদেরকে দৃঢ়তা প্রদর্শন করে সবার অন্তরে স্থান করে নিতে হবে। সম্প্রতি আমরা সকল ধর্মের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমরা বলেছি আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি, সকলে মিলে সুখে শান্তিতে আমরা বাংলাদেশে বসবাস করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, কবি, লেখক, শিল্পী, সংবাদিকদের বলা হয় জাতির জাগ্রত বিবেক। আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের অধিকাংশ মানুষই ইসলামী আদর্শ ও মুসলিম চেতনা লালন করে জীবনযাপনে অভ্যস্ত। ফলে এদেশের মানুষের কাছ থেকে ইসলামী বিশ্বাসের চিন্তা ভুলিয়ে দেওয়া সহজ নয়। ইসলামের শিকড় এদেশের মানুষের অনেক গভীরে মিশে আছে। বাংলাদেশের সবুজ জমিনে ইসলাম হাজার বছরের বটবৃক্ষ হয়ে অবস্থান করছে। ইচ্ছে করলেই কোনো অপশক্তি এটাকে উপড়ে ফেলতে পারবে না।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণের বিশ্বাস ও বোধের আলোকে আমাদের সংস্কৃতিকে মেলে ধরতে হবে। নতুন বিজয় পরবর্তী এই সময়ে আমাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির ধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 

কবি মোশাররফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্টের সেক্রেটারি মাহবুব মুকুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও মুহা. কামাল হোসাইন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির সভাপতি আবেদুর রহমান, কিডস ক্রিয়েশনের সিইও বাচিক শিল্পী শরীফ বায়েজিদ মাহমুদ, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি যাকিউল হক জাকী, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবু তাহের বেলাল, কবি ও সম্পাদক জাকির আবু জাফর, বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতজ্ঞ সালাউদ্দীন আহমেদ, চারু শিল্পী পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম মন্ডল, কবি নাসির হেলাল, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সহকারী সেক্রেটারি আল্লামা ইকবালসহ বিভিন্ন সাহিত্য সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।