‘আমার নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’

‘আমার নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নাম ভাঙিয়ে রাজধানী বিভিন্ন স্থানে যারা চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপকর্ম করছে আসছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বে তার নাম জড়িয়ে সংবাদ প্রচার বিশেষত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে জোরপূর্বক স্বপদে পুনর্বহালের পেছনে তার ইন্ধন রয়েছে— এমন বিষয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারেরও তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন স্থানে যারা চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এই বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একটি গোষ্ঠী বা কতিপয় দুর্বৃত্ত আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি ও নগর ভবনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছে। এমনকি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে জোরপূর্বক পুনরায় বসানোর পেছনে আমার ইন্ধন রয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করে আসছে।

এ বিষয়ে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এ ধরনের অপকর্মে আমার ন্যূনতম কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র এমন অপ্রচার চালাচ্ছে। যারা আমার নাম ভাঙিয়ে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে, আমি তাদের চিনি না। পাশাপাশি, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজিসহ যারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রশাসনকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিএনপির নাম পরিচয় দিয়ে কোনো নেতা-কর্মীর এসব কর্মকাণ্ড জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছি।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের বিষয়টি অবহিত করায় প্রকৌশলী ইশরাক গণমাধ্যমকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান।

জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ঘনিষ্ঠ খ্যাত ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান গেল কয়েকদিন  আগেই বরখাস্ত হয়েছিলেন। সেই কর্মকর্তা ২ সেপ্টেম্বর বহিরাগত একদল লোক নিয়ে নগর ভবনে ঢোকেন। এরপর থেকে আগের মতেই নিজ দপ্তরে অফিস করছেন। বিএনপি নেতাদের যোগসাজশে তিনি অফিস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।

ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। পরদিন থেকে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমন আন্দোলনে ডিএসসিসি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। পরে গত ১৪ আগস্ট ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে আশিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই আদেশে তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগে গুরুদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়।