‘সৈকতে নারীকে হেনস্থা করা ফারুকুলের সঙ্গে শিবিরের দূরতম সম্পর্ক নেই’
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস ও হেনস্থা করা ফারুকুল ইসলামের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের দূরতম সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
গণমাধ্যমে পাঠানো ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন স্থানে কিছু যুবককে নারীদের গায়ে হাত তোলাসহ অসম্মানজনক আচরণ করতে দেখা গেছে এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ কাজে ফারুকুল ইসলাম নামে এক যুবককে বিশেষভাবে সক্রিয় দেখা গেছে এবং তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ফারুকুল ইসলাম সরাসরি নিজেকে ছাত্রশিবির বলে পরিচয় না দিলেও তার ফেসবুক ওয়ালে কিছু পোস্ট শেয়ারের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে যে, সে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত। এই বিভ্রান্তির ফলে ছাত্রশিবিরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো যাচ্ছে যে, ফারুকুল ইসলাম বা তার এই ধরনের আচরণের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোনো সম্পর্কও নেই। ছাত্রশিবির সব সময় নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং নারীদের অসম্মান, অশ্রদ্ধা বা যেকোনো ধরনের অপমানজনক আচরণের তীব্র বিরোধিতা করে থাকে। ফারুকুল ইসলামের আচরণ ছাত্রশিবিরের আদর্শ ও নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা নারীদের সম্মানহানিকর যেকোনো কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয় নারী বা পুরুষ, যে কেউ অপরাধ করলে আইনগত সহায়তা বা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া বা কারও বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সকলের উচিত সর্বদা আইন ও ন্যায়বিচারের পথে চলা।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এক তরুণীকে কান ধরিয়ে উঠবস এবং মারধর করা হচ্ছে; এ রকম একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে সৈকতে এক তরুণীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করানো এবং লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে এবং তা পাশে দাঁড়িয়ে দেখছেন একদল অতিউৎসাহী জনতা।
কান ধরে ওঠবস করানোর ওই ভিডিও ছাড়াও ফেসবুকে আরও দু'টি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এর একটিতে দেখা যায়, সৈকতে চেয়ারে বসা এক নারীকে একদল যুবক গিয়ে চলে যেতে বলছেন। এক পর্যায়ে তাকে পেটানোর ভয় দেখিয়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানেও লাঠি হাতে ফারুকুলকে দেখা যায়।
এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় ওঠে। পরে শুক্রবার রাতে কক্সবাজার শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে ফারুকুলকে আটক করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। অভিযুক্ত ফারুকুলের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়।