অপকর্ম ধামাচাপা দিতে মরিয়া আ.লীগ, জাতিসংঘে পাঠালো অপপ্রচারের তথ্যচিত্র

জাতিসংঘে সহিংসতার ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টেশন পাঠিয়েছে আ.লীগ

নিজেদের অপকর্ম ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি স্বৈরাচারী পলাতক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শত শত ছাত্র-জনতাকে প্রকাশ্যে মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলেও এগেুলো বিএনপি জামায়াত করেছে বলে মিথ্যা ডকুমেন্টারি বানিয়ে অপপ্রচারে সক্রিয় দলটির সাইবার ও গবেষণা শাখা। সেই সঙ্গে নিজেদের এজেন্ট দিয়ে কিছু স্থানে মন্দিরে ভাঙচুরের অভিনয় করে সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে তথ্যচিত্রে।

আওয়ামী লীগ ‌‘মান্থলং স্টেট-স্পন্সরড প্রোগ্রাম টু ডিসিমেট আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক একটি ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্ট তৈরি করেছে। যা জাতিসংঘ, দূতাবাস, হাইকমিশন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এই নথিতে গত মাসে আওয়ামী লীগের নেতা, সদস্য এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে সহিংস ঘটনা এবং দমনপীড়নের একটি ধারাবাহিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিনিয়র একজন সদস্য ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্ট প্রকাশ ও বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, দলের নেতা, কর্মী এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর হামলা নথিভুক্ত করার জন্য মিডিয়া কভারেজ ব্যবহার করে দলটি ভিজ্যুয়াল রিপোর্ট তৈরি করেছে। এটি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাকে ই-মেইলের মাধ্যমে বিতরণ করে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় সমর্থকদের কথা বলার জন্য অনুরোধ করেছিল।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জামায়াতে ইসলামীর বিরোধী সংখ্যালঘু এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে সমন্বিত উপায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের গুরুতর লঙ্ঘন আপনার নজরে আনতে আমরা লিখছি।’

আওয়ামী লীগের দাবি, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে দলের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। প্রতিবেদনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কর্মীদের নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে হত্যা ও বাসস্থান লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘ, বিদেশি দূতাবাস এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং ক্রমবর্ধমান সহিংসতার আনুষ্ঠানিক নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা গণহত্যা বন্ধ করতে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং অবিলম্বে মানবাধিকার পুনরুদ্ধার করতে শাসনের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ করছি।’

দলটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিভাজন গভীরভাবে মোকাবিলা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা জাতিসংঘকে বিভাজনের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতির মোকাবিলা করার জন্য অনুরোধ করছি, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গণতান্ত্রিক পথে দেশটির উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

নথিতে সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরও বৃদ্ধি রোধ করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জাতীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো পরিস্থিতির সমালোচনামূলক প্রতিবেদন দমন করার জন্য তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশকে বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাওয়া নিয়ে সংসদীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করুন এবং আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য চাপ দিন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও সহনশীলতার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আওয়ামী লীগ।

নথিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গুরুতর অপব্যবহার আরও বাড়বে না তা নিশ্চিত করার জন্য একটি অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।