হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চান রাষ্ট্রপতি: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন।

ব্যাংক টাউন এলাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, 'পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর' যেমন ডিভোর্স লেটারের প্রয়োজন হয় না, তেমনি শেখ হাসিনার মতো পলায়নপর নেতার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগপত্রেরও প্রয়োজন হয় না।

রিজভী বলেন, 'রাষ্ট্রপতিকে তিনি (হাসিনা) নিয়োগ দিয়েছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং যুবলীগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। আমরা তার সম্পর্কে কিছু বলা থেকে বিরত ছিলাম কারণ আমরা চেয়েছিলাম তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। তবে তার সুর ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন, শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি কোনো পদত্যাগপত্র পাননি। ‘যে নারী তার স্বামীকে ছেড়ে অন্য পুরুষের কাছে চলে যায়, সে কি বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি দেয়? একইভাবে পলাতক নেতা পদত্যাগপত্র জমা দেন না। এমনটা হতেই পারে। কিন্তু আমরা জানি তিনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’

বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে চায় বলে রাষ্ট্রপতি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন প্রচণ্ড গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্রপতি নীরব ছিলেন। ‘কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি শেখ হাসিনার অনুসারী হয়ে উঠছেন। তিনি সম্ভবত কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটা করছেন।’

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত আসহাবুল ইয়ামিন ও নাফিসার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে আমরা বিএনপি পরিবার নামের একটি সংগঠন। নিহত দুই শহীদের পরিবারের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন রিজভী।

রিজভী দাবি করেন, স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার সহযোগীরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, 'গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালিয়েছে। অস্থিতিশীলতা উসকে দিতে তারা তাদের গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসবে।’

আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও গণহত্যায় জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। ‘যদি ফ্যাসিবাদ পুনরুজ্জীবিত হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এর দায় বহন করতে হবে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের কালো টাকা ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে, কারণ সরকার এসব অস্ত্র উদ্ধার বা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে জোরালো প্রচেষ্টা চালায়নি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।