শুধু নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি: সারজিস

শুধু নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি: সারজিস

গত জুলাই-আগস্টে দেশে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তাতে প্রায় দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এই মানুষেরা শুধু নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য প্রাণ দেয়নি বলে মনে করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। এজন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সিস্টেমগুলোর যৌক্তিক সংস্কারও করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আমরা বলছি না রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে নির্বাচনে যান। আমরা এটাও বলছি না আগামী পাঁচ-ছয় বছর সংস্কার করেন। কিন্তু সংস্কারের জন্য ন্যূনতম একটা যৌক্তিক সময় লাগবে। কোনো বিবেকবান মানুষ তার জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারবে না যে, এক বছরের মধ্যে সবকিছু সংস্কার হয়ে যাবে। ১৬ বছর ধরে যে সিস্টেমগুলোকে ধীরে ধীরে ভেঙে শেষ করা হয়েছে; সেই সিস্টেমগুলোকে, সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সিস্টেমগুলোর সংস্কার করতে যৌক্তিক সময় প্রয়োজন। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনে যাওয়া উচিত। তা না হলে আমরা আগের জায়গাতেই থেকে যাব।

শুধু একটা নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, এর পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠান জড়িত। এর মধ্যে অন্যতম হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে হবে। তা না হলে নির্বাচন দিলে আবার জবরদখলের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে। আবার এই নির্বাচন ঘিরে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, সেটার সমাধানের জন্য একটা বিচারিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। তাই বিচারব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।

এই সমন্বয়ক বলেন, যেই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ১৬ বছরে বাংলাদেশের নামীদামি রাজনৈতিক সংগঠন নড়াতে পারেনি, সেই শেখ হাসিনা কিছু লোকের জন্য এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিল বলে অভ্যুত্থান ঘটেছিল এবং শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিলেন।

এর আগে তিনি সিলেট বিভাগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ১৮ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক তুলে দেন। সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।