মুজিবের ছবি অপসারণ নিয়ে বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন রিজভী
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ করায় সরকারের সমালোচনার কয়েক ঘণ্টা পর তার অপ্রত্যাশিত বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে, যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি রয়েছে। আসলে বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার আইন করে শেখ মুজিবের ছবি টাঙিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের পতনের পর এ ধরনের ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকে না।
তিনি বলেন, ‘অফিস থেকে আদালত সর্বত্রই যেন দুঃশাসনের প্রতীক না থাকে। ওই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এর আগে বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর ঘটনাকে অযৌক্তিক বলে সমালোচনা করেন রিজভী।
সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেললেও জিয়াউর রহমান পরে তা আবার টাঙিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার(১২ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান উপলক্ষে দলটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আপারা এটি করতে পারেন, কিন্তু সময় সবসময় একইভাবে চলে না। সবার অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাই আমি মনে করি, তার (মুজিবের) ছবি সরিয়ে ফেলা উচিত হয়নি।’
রিজভী আরও বলেন, জাতীয় জীবনে ব্যক্তির অবদান ইতিহাস শেষ পর্যন্ত বিচার করবে এবং যে কারও অবদান ও অপকর্মের মূল্যায়ন ও পরিমাপ করা জনগণের দায়িত্ব হওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যেহেতু আমরা আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণমনা নই, তাই আমরা মনে করি, বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সোমবার (১১ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দরবার হল থেকে ৭১-পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের ফ্যাসিবাদী ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে আমরা তার ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। তবে যতদিন মানুষের জুলাই মাসের চেতনা বেঁচে থাকবে ততদিন তাকে কোথাও দেখা যাবে না।’