গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রাথমিক দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের: ড. মঈন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।

এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা কাপুরুষের মতো ভারতে পালিয়ে যান।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সে যেসব তরুণ ভোটার হয়েছেন, তারা গত ১৬ বছর ধরে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটের অধিকার ফিরে পেতে দেশের জনগণকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। ইনশাআল্লাহ সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে- যার জন্য ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষ জীবন দিয়েছিলেন।’

জাতীয়তাবাদী বাউল দল ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের 'সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান' স্মরণে 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী মাজার প্রাঙ্গণে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভোটের অধিকারসহ মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে মুছে ফেলে এবং মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ১৬ বছরের ক্ষমতায় থাকাকালে নতুন প্রজন্মকে বাকশালের ট্যাবলেট খাইয়েছে এবং পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করে বিকৃত ইতিহাস শিখিয়েছে।

ড. মঈন বলেন,'কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এতে কাজ হলে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘটত না। আওয়ামী লীগের মনগড়া ইতিহাসে বিভ্রান্ত হয়নি বলেই ৫ আগস্ট তরুণরা নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।‘

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আইনের শাসন, সত্য, ন্যায়বিচার ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে। ‘তারা মিথ্যা, অবিচার, নিপীড়ন, কারাবাস বা মিথ্যা মামলা সমর্থন করে না। আমরা সত্যের পথে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালালে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ‘কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করা আওয়ামী লীগ পালিয়ে আসা রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে কাজ করেছে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই।’

তিনি আরও বলেন,১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এবং জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে। ঠিক একইভাবে স্বৈরাচারী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কাপুরুষের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।’