সরকারকে ব্যর্থ করতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে পতিত স্বৈরাচার: ড. মোশাররফ

সরকারকে ব্যর্থ করতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে পতিত স্বৈরাচার: ড. মোশাররফ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেছেন, "বিদেশি প্রভুদের সহায়তায় পতিত স্বৈরাচার সরকার দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, যাতে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করা যায়।"

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এই মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

তিনি বলেন, “আজ আমরা দেখছি, ষড়যন্ত্র চলছে। যারা আগের সরকারের সময় স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট চরিত্র প্রদর্শন করেছিল, তারা এখন ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়… তারা কি শুধু গত তিন মাস ধরে এই দেশে বাস করছে? যারা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, তাদের মধ্যে কিছু মানুষ কেন ভারত থেকে শুরু করে এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে? তাদের একটাই উদ্দেশ্য, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা, যাতে অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়।”

খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, “আমরা যারা জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক, যারা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর আগে আমরা একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও একই আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা তাদের সমর্থন দিয়ে এসেছি, আমাদের সবাইকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “এদেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না। সবাই আমরা বাংলাদেশি, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতিসত্ত্বার পরিচয় দিয়েছেন। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ১৮ কোটি বা ২০ কোটি মানুষ একসাথে থাকলে কেউ আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সফল হতে পারবে না। ইনশাল্লাহ, আমরা সফল হব। স্বৈরাচার এরশাদের পতন যেমন হয়েছিল, তেমনি আমরা দেশের জনগণকে আহ্বান জানাই, দল-মত-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের দেশকে রক্ষা করি এবং উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। যারা যত চেষ্টা করুক, তারা আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “যারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা ভুলে যাচ্ছে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর তারা দেখেছে, বাংলাদেশের জনগণ সরকারের পতন ঘটাতে এবং সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম। আমরা ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে চাই, কিন্তু যদি সেটা সম্ভব না হয়, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মতো নতুন করে আমরা ঐক্যবদ্ধ হব।”

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তারা এখন এক বিদেশি দেশে আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে ষড়যন্ত্র করছে। তারা আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যা আমরা ভালোভাবেই বুঝতে পারছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পদ্ধতিতে সংস্কার করা হবে, বিশেষ করে নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, এই ক্ষেত্রে সংস্কার করা হবে। আমরা আগেও নির্বাচনের রোড ম্যাপের দাবি জানিয়েছিলাম, যা আমাদের আলোচনায় উপস্থাপন করা হয়েছিল।"

ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নব্বইয়ের ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান ও সুরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।