প্রয়োজনীয় সংস্কার করে এ বছরই নির্বাচন চায় বিএনপি
ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারকে বিএনপি বলেছে, দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ইইউ দূতের বৈঠক শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে যে আলোচনাগুলো হওয়া দরকার, সেগুলোই হয়েছে। কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ভাবনা কী, অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে ভাবনাগুলো কী কী— সেগুলো বৈঠকে আলোচনায় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি রোডম্যাপ সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, এ বছরের ভেতরেই নির্বাচন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
‘অন্য কোনো ভাবনার দিকে না গিয়ে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে গিয়ে, দেশে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অব্যাহত রাখতে হবে। অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশি দিন চলতে পারে না।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক ওয়েট থাকে না। তাদের মবিলাইজেশন প্রসেস থাকে না, জনগণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকে না। জনগণের কাছ থেকে কোনো ফিডব্যাকও তারা পায় না। এ কারণেই একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যত তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব, সেদিকে আমরা জোর দিয়েছি।’
সংস্কারের বিষয়ে খসরু বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে যেটি আলোচনা হয়েছে, সেটি হলো— যেসব বিষয়ে আমরা ঐক্যমতে যেতে পারব, সেগুলো এখনই বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। সেগুলোর ব্যাপারে সময় নেওয়ার কোনো কারণ নেই। আর যেগুলোর বিষয়ে ঐক্যমত হবে না, সেগুলো আগামী নির্বাচনে প্রতিটি দল জনগণের কাছে নিয়ে যাবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী দিনে সংসদে এসব বিষয় তোলা হবে, তর্ক-বিতর্ক হবে এবং সেগুলো অনুমোদন করা হবে।’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলমান আছে তা অব্যাহত থাকবে কিনা?— উত্তরে বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে বিএনপির অর্থনৈতিক সফলতা নিয়ে লক্ষ্যের কথা আমরা বলেছি। আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিকে এই খাদ থেকে তু্লে আনার জন্য বিএনপি ইতোমধ্যে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এছাড়া এই সরকারের সময় যদি এমন কোনো কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয় যা দেশের জন্য মঙ্গলজনক, সেটি অবশ্যই আমরা সমর্থন করব।’
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূতের পতাকাবাহী গাড়ি প্রবেশ করে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।