‘জামায়াত যখনই সুযোগ পেয়েছে বিএনপিকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করেছে’
জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এই রাজনৈতিক দলটি যখনই সুযোগ পেয়েছে তখনই বিএনপিকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করেছে। এটা আমরা প্রতিনিয়ত দেখেছি।’
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী রিকশা-ভ্যান-অটো চালক দল আয়োজিত স্মারকলিপি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান কিংস পার্টি গঠন করেছেন, কেউ কেউ এমন কথা বলেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনভাবে সংবাদপত্র পাঠ করা যদি গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত হয়ে থাকে তাহলে সেটির মহানায়ক জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের প্রতি সিপাহী এবং জনগণের সমর্থন ছিল। যিনি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘জনতার মধ্য থেকে জুলাই আন্দোলনে যে শ্রমিকরা নেমেছেন, যারা একদিন রিকশা চালাতে না পারলে তাদের পরিবারের ভাত হবে না, তাদের আত্মদানকে এত ছোট করে দেখছেন কেন? সেটার জন্য তো কর্তব্য ছিল বেশি। যে রিকশাচালক, ভ্যানচালক মারা গেছেন সরকারের পক্ষ থেকে তাদের তালিকা করে কবে পুনর্বাসন করা হবে? সে ব্যাপারে আপনাদের কাউকে তো আসতে দেখলাম না। ক্ষমতার ভাগাভাগি, রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নানা ধরনের অভিযোগের মধ্যে আক্রান্ত করা আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি।’
ছাত্রশিবিরের করা মধুর ক্যানটিনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির বলে, ‘ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখছি।’ কে কখন নিষিদ্ধ হয় আমরা জানি না। ছাত্রশিবিরকেও আমরা নিষিদ্ধ হতে দেখেছি একসময়। আমরা এটাও জানি, ছাত্রশিবিরের এখনকার অনেক নেতা ছাত্রলীগের মধ্যে অবস্থান করে অনেক পদ-পদবিও পেয়েছেন। অনেকেই ছাত্রশিবিরকে বলে গুপ্ত ছাত্রলীগ, এর উত্তর তারা কী করে দেবেন? এগুলোর তো নামের তালিকাসহ অনেক প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। অবান্তর কথা কেন আপনারা বলছেন? কিসের জন্য এসব কথা বলে আজ গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে এই বিভাজন তৈরি করছেন? আপনারা এই কারণে করছেন যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা যায় কি-না। কিন্তু এটা হবে না।”
রিজভী বলেন, ‘দেশে যেমন ইসলামী সংস্কৃতি-কালচার মুছে দেওয়া যাবে না। ইসলামী সংস্কৃতি, ইসলামের প্রতি বিশ্বাস আল্লাহর ওপর বিশ্বাস এটা তো জিয়াউর রহমান নিয়ে এসেছিলেন সংবিধানে। শেখ হাসিনা নানাভাবে, বার বার চেষ্টা করেছেন এটা মুছে ফেলার জন্য। আবার এটাও মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের জাতীয় সংস্কৃতির নানা অঙ্গ আছে, নানা বৈচিত্র্য আছে, এটাকেও মুছে ফেলা যাবে না। কার নির্দেশে চট্টগ্রামে বসন্ত বরণ বন্ধ করা হয়েছে? বিএনপি বিশ্বাস করে প্রতিটি ধর্মের সবাই তার মত প্রকাশ করবেন, প্রতিটি সম্প্রদায় তার ধর্মের চর্চা করবেন।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সরকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।