আজহারের ফাঁসি বহাল নাকি খালাস, জানা যাবে আজ

আজহারের ফাঁসি বহাল নাকি খালাস, জানা যাবে আজ

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির সাজা দিয়ে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে প্রায় এক যুগ ধরে। এই অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা এই জামায়াত নেতা ফাঁসির সাজার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছেন। সেই আবেদনটি একাধিকবার আদালতের কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি। অবশেষে আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।

আজকের কার্যতালিকায় এটি ১৯ নম্বর সিরিয়ালে রাখা হয়েছে। আজ রিভিউ আবেদনটির শুনানি শেষে এটি এলাউ করলে আজহার খালাস পাবেন। অপরদিকে রিভিউ আবেদনটি খারিজ করে দিলে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল থাকবে। তবে রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে অন্য সাজাও দিতে পারেন। সবকিছুই নির্ভর করছে আদালতের এখতিয়ারের ওপর।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই এটিএম আজহারের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে জামায়াতে ইসলামী। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় দলটি। রাজধানীর পল্টনে কেন্দ্রীয়ভাবে পালিত কর্মসূচি থেকে এটিএম আজহারকে মুক্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় জামায়াত। এর মধ্যেই তার রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় আসে।

দলটির নেতাকর্মীদের আশা ছিল, এটিএম আজহার জামিনে মুক্ত হবেন। তবে এদিন শুনানি না হওয়ায় অনেকটা হতাশ হন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান নিজের ফেসবুক পেইজে এটিএম আজহারের মুক্তি দাবি করে স্বেচ্ছায় কারাবরণের হুঁশিয়ারি দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের কর্মসূচিও ঘোষণা করে জামায়াত। তবে শেষ মুহূর্তে দলটি তাদের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেন। যদিও এটি প্রহসনের রায় বলে আখ্যায়িত করে আসছে জামায়াতে ইসলামী।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে জামায়াত নেতা আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।