আয়নাঘরের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার করতে হবে: নুরুল হক

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, 'পিলখানা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও আয়নাঘরের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে যারা জড়িত, তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা দরকার। ইতোমধ্যে তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আশা করি বাকিদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করার মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনীর দায়মুক্তি হবে।’

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে বনানীর সামরিক কবরস্থান পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

নূর বলেন,  '২০০৯ সালে কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে যে সমস্ত সেনা অফিসারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

স্বজনহারা পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নূরুল হক নূর বলেন 'সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে সেনাবাহিনী ভূমিকা পালন করে আসছিল, সেই সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করতে পরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের তো বিচার বিগত সরকার করেইনি, বরং সেনা সদস্যদের প্রতি নূন্যতম সম্মানও দেখায়নি।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তত ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। এজন্য আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের এই পিলখানা হত্যাযজ্ঞের একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হওয়া দরকার। এর পেছনে যে কুশিলবরা জড়িত সেটা জাতির সামনে উন্মোচন করা দরকার।

নুর বলেন, আমরা মনে করি এই ঘটনা শুধু দেশে অভ্যন্তরীণভাবেই ঘটেছে এবং অভ্যন্তরীণ শক্তি জড়িত সেটা না, এর সঙ্গে বহির্শক্তিও জড়িত। আমরা ২০০৯ সাল পরবর্তী  সময়ে দেখেছি বিভিন্ন দৃশ্যমান ঘটনাও দেখেছি।

তিনি আরও বলেন 'একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে কিভাবে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রের পরিণত করা যায় তার জন্য ২০০৯ সাল থেকে পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে এবং দেশে একটি একদলীয় শাসন কায়েম করে কার্যত বাংলাদেশকে ভিনদেশী করদ রাষ্ট্র পরিণত করেছিল।

নুরুল হক বলেন,'আপনারা লক্ষ্য করেছেন, জাতির ঐতিহাসিক সংকটগুলোতে সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। জনগণের কাতারে এসে শামিল হয়েছে। ১৯৭১ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত কিংবা ৯০ কিংবা সর্বশেষ ২০০১ আপনারা যদি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটগুলো লক্ষ্য করেন, প্রতিটি প্রেক্ষাপটেই দেখবেন যে একটি সাহসী ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু মহল সেনাবাহিনীকে গণঅভ্যুত্থানের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এটি আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল হবে না। আমরা সে ব্যাপারেও দেশবাসীকে সতর্ক করছি। পাশাপাশি ২০২৪ সালে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ানোর সেনাবাহিনীর সেই সাহসী ভূমিকাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

নুর বলেন, ‘আয়না ঘরের মতো বর্বর নিপীড়নের সঙ্গে যারা জড়িতরা সেটা সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা, সবাই না।'