নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো বিভাজন তৈরি না হয় : মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপির) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো বিভাজন তৈরি না হয়। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় অমর একুশে বইমেলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখা শামা ওবায়েদের ৩টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে পেরেছি। এখন আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো বিভক্তি বা বিভাজন তৈরি না হয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা নির্মাণ করব, সমাজ নির্মাণ করব। এই লক্ষ্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত। এই প্রশ্নে কোন বিভাজন সৃষ্টি হলে ক্ষতি হবে দেশ ও জনগণের।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিত হবে ছাত্রজনতা যে আত্মত্যাগ- প্রাণ বিসর্জন সবকিছুকে মূল্য দিয়ে- মর্যাদা দিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সেটা বিনির্মাণের জন্য এগিয়ে যাওয়া।’
আমাদের মুক্ত চিন্তা করা প্রয়োজন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রত্যেকটি মানুষ প্রত্যেকটি দল যেন মুক্ত চিন্তা করতে পারে। কারও সাথে মতের মিল নাও থাকতে পারে। কিন্তু তার মত প্রকাশে জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করার মানসিকতা থাকতে হবে। তবে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করতে দেখা যায়। এটা দুঃখজনক। নতুন প্রজন্মেকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ভাবতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদের অধীনে থেকে আমরা আমাদের চিন্তার প্রকাশ করতে পারেনি। আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি এবং একই সঙ্গে এই দেশে একটি ফ্যাসবাদী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেখান থেকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্ত হয়েছি। এর জন্য যারা সংগ্রাম-লড়াই করেছেন, আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। দীর্ঘ ১৫ বছরে যারা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই, সংগ্রাম করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
রাষ্ট্রের সংস্কারে প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে যে সংস্কারের কথা উঠেছে, আমরা মনে করি অবশ্যই রাষ্ট্রের পরিবর্তনগুলো করা দরকার। এটা উপলব্ধি করে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ‘ভিশন ২০৩০’ দিয়েছিলেন। যাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলা ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২২ সালে রাষ্ট্র কাঠামোকে রূপান্তরের জন্য ৩১ দফা দিয়েছিলেন। আজকে যে সংস্কারের প্রধান বিষয়গুলো আসছে এগুলো সবই সেই ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে।
ইচ্ছে করলেই সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না উল্লেখ করে বিএনপির এই সাবেক মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের ভাষণ ও দেশ পরিচালনায় অসাধারণ প্রজ্ঞা নিয়ে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
খালেদা জিয়াও স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে গেছেন। কোনো আপস না করে তারেক রহমান জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।