দেশে নারী-শিশু নির্যাতন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে: সালাহ উদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমানে নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সরকারকে এটি কঠোর হাতে দমন করতে হবে। অন্যথায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তিনি বলেন, বিএনপি এসব ঘটনায় দলীয়ভাবে প্রতিবাদ করেছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবাদ করছি।

শনিবার (৮ মার্চ)  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মাঠে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নারী নির্যাতন বৃদ্ধি পাওয়ারজন্য বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারকেও দায়ী করে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কারণ সে সময় বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল। দেশের সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টায় আওয়ামী ফ্যাসীবাদের হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বত্রই নারীদের গৌরবোজ্জ্বল অংশগ্রহণ ছিল। বিগত জুলাইয়ের আন্দোলনও তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাই সংসদীয় ব্যবস্থাসহ সবক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নারী, শিশু ও যুব সমাজের উন্নয়নে যেসব প্রাতিষ্ঠানিক ও সাংবিধানিক  পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, এর মাধ্যমে জাতি অনেক দূর এগিয়েছে।

নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগ্রামী নারী এবং জুলাই নারী শহীদ ও আন্দোলনকারীদের বিশেষ ট্রিবিউট প্রদানে বইমেলা, নারী উদ্যোক্তাদের স্টল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শুরুতেই এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনা বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সাবেক এমপি শিরীন সুলতানা, অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আর্নি, কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার, সাবেক এমপি ও বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সহসম্পাদক রেহানা আক্তার রানুসহ প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি সায়মা হক বিদিশা, অধ্যাপক তাজমেরী তাজমেরী এস ইসলামসহ অন্যরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সেলিমা রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবে ছাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু তাদেরকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। সবক্ষেত্রে নারীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। মব জাস্টিস হচ্ছে। তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, এসব ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন। সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপি সব সময় নারীবান্ধব দল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া নারীদের বিষয়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি নারীদেরকে সরাসরি নির্বাচনে বেশি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিগত সরকারের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫ মাস কারাবরণকারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরা। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভিন্নমত সহ্য করতে পারতেন না। একটি টকশোতে অংশগ্রহণ করায় তাকে বিনা বিচারে কারাগারে নিয়েছে। তিনি বলেন, নারীরা কখনও নিরাপদে ছিল না এখনও নেই। বিশেষ করে মাগুরার ছোট্ট শিশুটির ওপর পাশবিক নির্যাতনকারীদের বিষয়ে এখনও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরাকে ছাত্র দলের পক্ষ থেকে বই, কোরআন শরিফ ও জায়নামাজ উপহার প্রদান করা হয়।