বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতন্ত্রিক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম সংযুক্ত করে মহান আল্লাহ তায়ার উপর অবিচল আস্তা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘তিনি(জিয়াউর রহমান) দেশের সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে সকলের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে সকল মানুষের ধর্মীয় চর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এদেশে ধর্ম-বর্ণ, ভাষা ও জাতির ভিত্তিতে বিভক্তি হবে না, সবাই বাংলাদেশি।’

সালাহউদ্দিন বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ার মুহূর্তেই তিনি কুচক্রী মহলের হাতে শাহাদাত বরণ করলেন। কিন্তু তিনি বেঁচে রইলেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।

বিএনপিকে জনগণের দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে। বিএনপি দুর্বল হলে বাংলাদেশ দুর্বল হবে।

স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘বিএনপির জন্ম না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হত না। বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না। তাই বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার।’

সোমবার (১৯ মে) বিকালে সিলেট নগরীর শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে সিলেট বিভাগে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, যেই মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন। এই দেশের প্রতিটি ধুলি কনাকে বিএনপি ধারণ করে, লালন করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারিভাবে ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা, এখন ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে? যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নাই, তাদের কেন আহ্বান করতে হবে বিএনপির সদস্য হওয়ার জন্য?

বিএনপি নেতা বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা নিজেদের অপকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা করেনি বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। উল্টো তারা গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে। তারা কীভাবে বাংলাদেশ রাজনীতি করতে পরবে?

সালাহউদ্দিন বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম, একদিন নিষ্টুরভাবে ফ্যাসিবদের পতন হবে। যারা দেশের জনগণকে হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, গুম, অপহরণ করেছে তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশ যেন কোনোদিন আর স্বৈরশাসকের বা ফ্যাসিবাদের উৎপাদন না হয়—সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হক, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আরাফুল কবির খোকন প্রমুখ।