গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একমাত্র উপায় জাতীয় নির্বাচন: আমীর খসরু

দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একমাত্র উপায় হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।

তিনি বলেন, ‘জনগণের গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য নির্বাচন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লন্ডনের বৈঠকে দুই নেতা (প্রধান উপদেষ্টা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) এই বিষয়ে একমত হয়েছেন।’

সোমবার (১৬ জুন) সকালে লন্ডন থেকে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন খসরু।

শুক্রবার (১৩ জুন) অধ্যাপক ইউনূস ওতারেকের মধ্যে বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতির বিরোধিতা করে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যে সমালোচনা করেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যদি আমরা সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি—তাহলে সবারই নিজস্ব মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘সুতরাং, প্রত্যেকেরই তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার আছে। আমি মনে করি, এটি আমাদের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তিগুলোর মধ্যে একটি—যে প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারে। আমাদের অবশ্যই এটি মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।’

নির্বাচনের তাৎপর্যের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। ‘তরুণ প্রজন্ম কখনও ভোটদানের সুযোগ পায়নি। তাই তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায়।’

বিএনপি নেতা আশা প্রকাশ করেন, দেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে, কারণ জনগণ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিশাল ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়েছে।

ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলোর সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, সংস্কার ঐকমত্যের উপর নির্ভর করে এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। ‘সংস্কার নির্বাচনের আগে শেষ হবে না এবং এর পরেও অব্যাহত থাকবে।’

ফ্যাসিবাদীদের বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের উপর নির্ভর করে। ‘বিচার বিভাগ বিচার পরিচালনা করবে এবং অভিযুক্তদের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রায় ছয় মাস সময় আছে। যদি এই সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন না হয়, তাহলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেবে।’

রাজনৈতিক ঐকমত্য সম্পর্কে বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে যত বেশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জাতির জন্য ততই মঙ্গল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐকমত্যের কারণেই আমরা স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসককে সরাতে সক্ষম হয়েছি। তাই, আমরা যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করব।’

নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে খসরু বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপির কোনো বড় আপত্তি নেই। ‘আমরা সবসময় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে। যদি সময়সীমা ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে স্থানান্তরিত হয়, তবে এটি কোনো বড় বিষয় নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া।’