সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের নিয়ম সমর্থন করি না: নাহিদ ইসলাম
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের নিয়মে কোনো নিয়োগে সমর্থন করবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকের বিরতিতে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদের বিষয়ে (এনসিসি) আমরা একমত হয়েছি। এটির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগের ব্যবস্থা হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) সমর্থন জানিয়েছি।
‘তবে গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে অনেকগুলো দলের ভিন্নমত রয়েছে। সেই জায়গায়, আমাদেরও কিছু ভিন্নপ্রস্তাব আছে। কিন্তু নীতিগত জায়গায় এখানে অনেকগুলো দল এনসিসির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
এনসিপিপ্রধান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতায় আমরা জানি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও নির্বাচন কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। কাজেই এসব প্রতিষ্ঠানে আগের আইন ও আগের নিয়মে কোনো নিয়োগকে আমরা সমর্থন করি না।’
‘ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব রয়েছে। আমরা বলেছি, যারা এনসিসির বিরোধিতা করছেন, তাদের কাছে যদি বিকল্প কোনো প্রস্তাব থাকে, সেটা যাতে তারা তুলে ধরেন। কারণ, এই উদ্বেগের সমাধান দরকার। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে নিরপেক্ষ থাকে, সেটা দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যাতে দলীয় অবস্থানের বাইরে থেকে জাতীয় স্বার্থে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছাব বলে আমি মনে করি।’
এনসিসি গঠনকে ক্ষমতার ভারসাম্য হিসেবে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের অসম ক্ষমতা হ্রাস করতেই আমাদের নতুন বাংলাদেশের যাত্রা। তাই আমরা এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছি। তবে এখানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। পাশাপাশি এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে রাখা উচিত নয়। এটা নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।’
‘যারা এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করছেন, তারা বলার চেষ্টা করছেন যে এটা নির্বাহী বিভাগকে বা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে খর্ব করে কিনা। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কারা নিয়োগ পাবেন, সেটা নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব না। বরং আগে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ক্ষমতা চর্চা করতেন, সেটা ছিল অন্যায্য ও অগণতান্ত্রিক। সেই ব্যবস্থা ও সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই কেউ যাতে রক্ষণশীল অবস্থানে না থেকে, পুরোনো কাঠামোতে সমর্থন না দিয়ে, যে জন্য গণঅভ্যুত্থান ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের যাত্রা, সেই দিকে যাতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। যাতে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য কাজ করি।’