লন্ডন বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আশা বাড়ছে: ডা. জাহিদ
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর দেশে শান্তি ফিরে আসছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নতুন আশা তৈরি হয়েছে।’
লন্ডন বৈঠকের পর আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও বিবৃতির বিরোধিতা করায় জামায়াতে ইসলামীরও সমালোচনা করেন তিনি।
শনিবার (২১ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বৈঠকের আগে এবং পরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের অস্থিরতা কমে গেছে। শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসছে, কারণ মানুষ এখন এমন একটি নির্বাচনের আশা করছে—যা অনেকেই বিলম্বিত করার চেষ্টা করছিলেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের ক্ষমতা এবং দেশের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জাহিদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষমতা জগণের অধিকারের মধ্যে নিহিত—যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন।’
গত ১৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে ড. জাহিদ বলেন, ‘অনেকেই এ বিষয়ে অনেক কথা বলছেন। জামায়াত ও অন্যান্য দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে এবং পরবর্তীতে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেছে।’
জাহিদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবও পৃথকভাবে বৈঠক সম্পর্কে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেছেন।’
‘এতে কোনো দোষ নেই, কিন্তু আপনি তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সমালোচনা করেছেন... সম্ভবত এখন নিজের চেহারা আয়নায় দেখার সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘তারেক কেবল একজন ব্যক্তি নন, বরং দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে।’
‘তারেক রহমান তার যোগ্যতা দিয়ে গণতান্ত্রিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাই, যখন আপনারা নিজেদের তার সঙ্গে তুলনা করেন, তখন মানুষ হাসে।’
জামায়াতের বক্তব্যের সমালোচনা করে জাহিদ বলেন, ‘এটা বলবেন না যে পুরো জাতি লজ্জিত হয়েছে। আপনারা পুরো জাতির পাইকারি বিক্রেতা নন। আপনি কিভাবে ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হলেন? আপনি বলতে পারেন যে আপনাদের দল লজ্জিত হয়েছে।’
জাহিদ বলেন, ‘পুরো জাতি নিয়ে কথা বলবেন না। যদি আপনারা পুরো জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করেন—তাহলে হিসাবটা ভিন্ন, কারণ বাংলাদেশের বৃহত্তম দলের নাম বিএনপি।’
তিনি আরও বলেন, দল সম্পর্কে যারা নেতিবাচক কথা বলছে, তাদের নিয়ে চিন্তা করতে চায় না বিএনপি। কারণ তারা (বিএনপি) পিছনে ফেরার চেয়ে সামনের দিকে এগোতে চায়।
বিএনপি ইতোমধ্যেই ৩১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে তিনি জনসমর্থন অর্জনের জন্য জামায়াতকে নিজস্ব ইশতেহার উপস্থাপন করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘তাহলে জনগণ দেশ পরিচালনা ও গড়ার দায়িত্ব যাকে খুশি তাকেই দেবে।’