জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন: সংবিধান কোনো ‘সাহিত্য’ নয়

সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি

জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘সংবিধান কোনো সাহিত্য নয়; যেখানে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পর্যন্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, সেখানে জুলাই ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্তির কোনো কারণ নেই।’

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে বিএনপি আন্তরিক। তবে একটি পুরো ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে যোগ না করে জুলাইয়ের চেতনা এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যোগ করা যেতে পারে।’

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ১০ এপ্রিলের ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে ১৭ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠন হয়েছিল। যুদ্ধ শেষে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নতুন সংবিধান প্রণয়ন হলে সেখানে এই ঘোষণাপত্র পুরোটা যুক্ত না করে এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছিল। এখন জুলাই ঘোষণাপত্র যোগ করতে গেলে প্রশ্ন উঠবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থান কেন সংবিধানে যোগ করা হবে না।’

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘১২ ফেব্রুয়ারি সরকারের দুই উপদেষ্টার কাছে এই ঘোষণাপত্রে বিএনপির অবস্থান নিয়ে খসড়া প্রেরণ করা হলেও এ কয় মাসে এর কোনো উত্তর আসেনি। গত কয়েকদিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে এক উপদেষ্টা যোগাযোগ করলে একদিনের মাথায় বিএনপি প্রতিউত্তর দিয়েছে। জুলাই প্রসঙ্গে বিএনপি বরাবরই আন্তরিক।’

ঐকমত্য কমিশনে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই আপিল বিভাগের সর্বজ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতির মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিতে পারবেন রাষ্ট্রপতি। এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত হলেও বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতানৈক্য দেখা গেছে। তাই এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৃহস্পতিবারের আলোচনায় বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।