হাসিনা কখনোই ক্ষমা পাবে না: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও বর্বরতার জন্য ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা কখনো ক্ষমা পাবেন না।
তাকে ‘মানবতার এবং সব মায়েদের প্রতি লজ্জা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক যাত্রা, চিরসবুজ স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী কৃষক দল ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ যৌথভাবে শের-ই-বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে এই কর্মসূচি আয়োজন করে, যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে নিম গাছের চারা রোপণ করা হয়।
একজন শোকাহত মায়ের কান্নার কথা স্মরণ করে আন্দোলনে তার ছেলেকে হারানোর কথা উল্লেখ করে আবেগঘন ভাষণে বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, ‘ওই মা তার ছেলের মাধ্যমে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু তার ছেলেকে প্রথমে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে গুলি করে অন্যদের সঙ্গে তাকে ভ্যানে করে ফেলে দেওয়া হয়—সে জীবিত নাকি মৃত, তাও পরীক্ষা করা হয়নি। পরবর্তীতে আগুন দিয়ে এসব মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাবুন তো—আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক।’
বিএনপি নেতা বলেন, তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন।
‘এই দেশের পুলিশ ও প্রশাসন, যারা জনগণকে রক্ষা করার কথা ছিল, যাদের বেতন করদাতাদের টাকায় দেওয়া হয়, তারা আমাদের সন্তানদের পুড়িয়ে ও হত্যা করেছে। এর চেয়ে নির্মম ও নিষ্ঠুর কিছু হতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো তাদের বিচারের মুখোমুখি আনা। দ্বিতীয়ত, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন করা। যারা আহত হয়েছেন এবং চোখ হারিয়েছেন, তাদের যথাযথ চিকিৎসা ও সহায়তা দিতে হবে। যদি আমরা ব্যর্থ হই, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’
ফখরুল আরও জানান, বিএনপি আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোর জন্য একটি তহবিল গঠন করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি গতকাল (শনিবার) বলেছি, আজও বলছি—নির্বাচন হবে। ক্ষমতা পাওয়া যাবে কি না তা আলাদা বিষয়। আমরা আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে একটি তহবিল গড়ে তুলব, এবং এই তহবিল থেকে আমরা যতটা সম্ভব এই পরিবারগুলোকে সহায়তা করব।’
ফখরুল বলেন, তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তহবিল গঠনের বিষয়ে কথা বলবেন। যদিও ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ মাধ্যমে ইতিমধ্যে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে সহায়তা করে আসছেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, তাদের দল শহীদদের ইচ্ছা অনুযায়ী একটি সত্যিকারের লিবারেল গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটি সত্যিকারের লিবারেল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা। আমরা নতুন বাংলাদেশ চাই। আমরা পরিবর্তন চাই। আমরা দুর্নীতি চাই না। আমরা ঘুষ চাই না। আমরা হত্যা চাই না। আমরা নির্যাতন চাই না। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে মানুষ নিরাপদে, স্বাধীনভাবে ও শান্তিতে থাকতে পারে।’