রাজনৈতিক স্বার্থে শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করার আহ্বান তারেকের

জাতীয় নির্বাচন ব্যাহত করার লক্ষ্যে ধূর্ত কৌশলের মাধ্যমে সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনে পেশাজীবী পরিষদের এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নির্যাতনের শিকার শহীদ এবং পেশাজীবী পরিবারগুলোর সম্মানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আমার জায়গা থেকে বলছি, যারা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন এবং জনগণের অধিকার রক্ষার কাজ করার পরিবর্তে রাষ্ট্র ও সরকারের উপর নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে বিভিন্ন প্রতারণামূলক কৌশল ব্যবহার করছেন—তাদের প্রতি আমি বিনীত আবেদন জানাতে চাই, দয়া করে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না।’

তারেক অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নির্দিষ্ট মহল ক্ষমতায় তাদের প্রভাব ধরে রাখতে, সরকারকে প্রভাবিত করতে এবং বিভিন্ন উপায়ে তাদের নিজস্ব সুবিধা নিশ্চিত করতে চায়। ‘তারা কৌশলে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এটি এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষ এ বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেছে।’

বিএনপি নেতা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব কোনো একক গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের নয়, কারণ সর্বস্তরের মানুষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘তারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলেন। চলমান রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ ও মেরুকরণের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের আত্মত্যাগ আমরা যেন ভুলে না যাই।’

তারেক আরও বলেন, নতুন রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন নতুন নতুন দাবি উঠলেও জাতিকে শহীদদের আত্মত্যাগ ভুলে যাওয়া উচিত নয়।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘শাসকরা হয়তো বদলে গেছেন, কিন্তু শাসনের প্রকৃতি একই রয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। জনগণের মধ্যে যদি এই ধরনের ধারণা তৈরি হয়—তাহলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের প্রক্রিয়ায় এটি একটি গুরুতর সংকট তৈরি করবে।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘এজন্যই আমি বারবার বলতে চাই, ফ্যাসিবাদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, জাতির বীর সন্তানদের প্রতি আমাদের ঋণ শোধ করার এখন সময় এসেছে।’

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) একটি প্রশিক্ষণ বিমানের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, তিনি ইতোমধ্যেই দলীয় নেতা-কর্মীদের হতাহতদের পাশে দাঁড়ানোর এবং আহতদের সকল প্রকার সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণে অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করা হয় এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য না দিয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান।