মার্তিনেজ ‘বাড়ি ফিরতে চাননি’
পেনাল্টি শুট আউটের প্রথম শট লিওনেল মেসি মারলেও তার শট বারপোস্টে লেগে চলে যায় ওপরে। তখন হতাশা নেমে আসে পুরো আর্জেন্টিনা শিবিরে। কিন্তু ইকুয়েডরের পরপর দুই শট রুখে দিয়ে আর্জেন্টাইনদের জয়ের নায়ক হয়ে গেলেন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজে।
কোপার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর পেনাল্টি শুট আউটে ইকুয়েডরকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ফলে কোপার সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলল মেসিরা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) টেক্সাসের হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও প্রথম আক্রমণ করে ইকুয়েডর। ম্যাচের ১৫তম মিনিটে ময়েসেজ কালসেডোর বাড়ানো পাসে জেরেমি সারমিয়েন্তোর শট রুখে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কিছুক্ষণ পরই আরও লক্ষ্যে শট নেন পায়েজ। সব মিলিয়ে ম্যাচের ২৫ মিনিট পর্যন্ত আর্জেন্টাইনদের বেশ চাপে রেখেছিল ইকুয়েডর।
তবে শুরু থেকে বেশ অগোছানো আর্জেন্টিনা ম্যাচের ২৭তম মিনিটে প্রথম আক্রমণ শাণায়। লাহুয়েল মলিনার ক্রসে হেড দিয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি এনজো ফার্নান্দেজ।
ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে মেসির পাস থেকে শট নিয়েছিলেন এনজো। তাতে কাঙ্ক্ষিত গোল আসেনি।
এরপর ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিসান্দ্রো। কর্নার থেকে মেসির উড়িয়ে দেওয়া বল ডি-বক্সের ভেতরেই মাথা ছুঁইয়ে দিক বদলে দেন ম্যাক অ্যালিস্টার। সেখান থেকে নিখুঁত স্পর্শে জাল খুঁজে নেন লিসান্দ্রো। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ১-০ ব্যবধানের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ৫৪ মিনিটে এমি মার্টিনেজের কিক থেকে ডি বক্সের ভেতর বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন লাওতারো। ম্যাচে ৫৯ মিনিটে কর্নার থেকে ডি বিক্সের ভেতর হেড দিতে গিয়ে রড্রিগো ডি পলের হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও স্পট কিক থেকে বল গোলবারে মারেন তিনি। সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয় ইকুয়েডর। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে প্রথম গোলমুখে শট নেন লিওনেল মেসি। তার ডান পায়ের শট সোজা গোলরক্ষক বরাবর গেলে সেটি তিনি রুখে দেন।
ম্যাচে যখন আর্জেন্টিনা জয়ের সুবাস পাচ্ছিল তখনই ম্যাচের ৯২ মিনিটে ইকুয়েডরের কেভিন রড্রিগেজ গোল করে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান। কোপায় কোনো অতিরিক্ত সময়ের নিয়ম না থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে আবারও সেই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বীরত্বে ম্যাচ জিতলো আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম পেনাল্টি মিস করেন মেসি। কিন্তু এমি মার্টিনেজ টানা দুটি পেনাল্টি রুখে দিয়ে আর্জেন্টিনাকে ম্যাচে ফেরান। শেষ পেনাল্টিতে নিকোলাস ওটামেন্ডি আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করে দলকে সেমিফাইনালে তোলেন। পেনাল্টি শুট আউটে ইকুয়েডরকে ৪-২ গোলে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
দলকে জিতিয়ে মার্তিনেজ বলেছেন, 'আমি বাড়ি যেতে প্রস্তুত ছিলাম না। ছেলেদের বলেছিলাম যে আমি বাড়িতে যেতে প্রস্তুত নই। আমি মানুষের সঙ্গে খুবই সংযুক্ত রয়েছি বলে অনুভব করি, আমার সঙ্গে আমার পরিবারও ছিল, এটি বিশেষ মুহূর্ত। এই দলটি (আর্জেন্টিনা) এগিয়ে যাওয়ার যোগ্য, এটা রোমাঞ্চকর।'