জার্মানিকে বিদায় করে সেমিতে স্পেন
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে নেমেছিল স্বাগতিক জার্মানি। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচটিতে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে স্প্যানিশরা। এই জয়ে স্বাগতিকদের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
শুক্রবার স্টুটগার্ট অ্যারেনায় অঘোষিত ফাইনালে মুখোমুখি হয় দুদল। ম্যাচটিতে স্পেনের হয়ে একটি করে গোল করেন দানি ওলমো ও মিকেল মেরিনো। জার্মানির হয়ে একটি গোল করেছেন নিকলাস ফুলক্রুগ।
ম্যাচটিতে ৫২ শতাংশ বল দখলে রেখে স্পেনের ডেরায় ২৩টি আক্রমণ চালায় জার্মানি। যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ৪৮ শতাংশ বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ১৮টি শট নেয় স্প্যানিশরা। যার মধ্যে ৫টি শট লক্ষ্যে ছিল।
ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আক্রমণে ওঠে স্পেন। তবে পেদ্রির নেয়া শটটি রুখে দেন নয়্যার। এর মিনিট তিনেক পরেই পেদ্রিকে ফাউল করেন টনি ক্রুস। সেই আঘাতে ম্যাচের অষ্টম মিনিটে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। তার বদলি হিসেবে মাঠে আসেন দানি ওলমো।
১৫তম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ইয়ামালের বাঁ পায়ের শট বেশ ক্লোজ ছিল। পোস্টের ডানদিক ঘেঁষে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর ফ্যাবিয়েন রুইস বক্সের বাইরে থেকে মারেন ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ২১তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় জার্মানি। জসুয়া কিমিচের ক্রুস থেকে কাই হাভার্টজের বক্সের মধ্য থেকে হেড অবশ্য ফিরিয়ে দেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
৩৫তম মিনিটে স্পেনের হাভার্টজকে গোল করতে দেননি নুয়্যার। ৩৯তম মিনিটে দানি ওলমো আর ৪৫তম মিনিটে ইয়ামালের শটও আটকে দেন জার্মান গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে একাধিক অ্যাটেম্প নিয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে স্পেন-জার্মানি। এতে গোলশূন্য ড্র-যে বিরতিতে যায় চলমান ইউরোর সেরা দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের গতি ফেরে ৫১তম মিনিটে। দানি ওলমোর গোলে লিড নেয় স্পেন। অপরদিকে জার্মানির একের পর এক আক্রমণ ম্যাচে যোগ করেছিল বাড়তি উত্তেজনা। নিকলাস ফুলক্রুগকে নামিয়েছিলেন কোচ নাগেলসম্যান। জার্মানিরও সম্ভাবনা বেড়েছিল তাতে।
ফুলক্রুগ ও হাভার্টজের জুটি এরপর বেশ খানিকটা সময় ভয় ধরায় স্পেনের ওপর। যদিও একের পর এক আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়ে স্পেনকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
৭৬তম মিনিটে ম্যাচে নিজেদের সেরা সুযোগ পেয়ে যায় জার্মানি। নিকোলাস ফুল্ক্রুগের মাটি কামড়ানো শট ফিরে আসে গোলবার থেকে। ৮০তম মিনিটে ফাঁকা পোস্টে গোল মিস করেন হাভার্টজ।
এরপরই ৮৮তম মিনিটে জার্মানি পায় নিজেদের কাঙ্ক্ষিত গোল। জটলার মাঝে জশুয়া কিমিখের হেড থেকে বল পেয়ে ভলিতে গোল করেন ফ্লোরিয়ান ভির্টজ। ম্যাচে ফেরে সমতা। ৯০তম মিনিটের লড়াই শেষে জার্মানি-স্পেনের ম্যাচ ভাগ্য গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
৯১তম মিনিটে ফেরান টরেসের হেড সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ১০১তম মিনিটে আনদ্রিখের দারুণ শটও বাইরে চলে যায়। দুই দল আক্রমণের পাশাপাশি একে অন্যকে মেরেও খেলতে থাকে তারা।
১০৪তম নিনিটে ওয়ারজাবালের বাম পায়ের বাকানো শটও খুঁজে পায়নি গোলের নিশানা। ১০৫তম মিনিটে আবারো সেই ভিরতজের ডিবক্সের ভেতর নেওয়া বাঁ পায়ের বাকানো শট গোলবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও চলে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ। ১০৬তম মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট কুকুরেল্লার হাতে লাগলেও রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি। ১০৯তম মিনিটে ফুলক্রুগ ডিবক্সের ভেতর দারুণভাবে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কিক নিলেও তা অন টার্গেটে হয়নি।
কিন্তু ১২০ মিনিটে যেন হ্যালির ধুমকেতুর মত জ্বলে উঠলেন মেরিনো। দানি ওলমক্র ক্রস থেকে দারুণ হেডে গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানের অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দেন তিনি।