ঘরের মাঠেও জার্মানির হৃদয় ভাঙার গল্প
বড় মঞ্চে আরও একবার হৃদয় ভাঙার গল্প জার্মানির। সেটা আবার নিজেদের ঘরের মাঠেই।
সাম্প্রতিক অতীতের বিবর্ণতা ঘুচিয়ে এবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শুরু থেকেই মন জুড়ানো ফুটবল খেলে যাচ্ছিল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল। ঘরের মাঠে আসর বলে দলটির দীর্ঘ শিরোপা খরা কাটবে, এমন আশায় বুক বাঁধছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু সবশেষ ১৯৯৬ আসরের চ্যাম্পিয়নদের এবার কোয়ার্টার ফাইনালেই থামিয়ে দিল স্পেন।
স্টুটগার্টে শুক্রবার রাতে প্রতিযোগিতার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে দে লা ফুয়েন্তের দল। উত্তেজনা ও রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচটিতে নির্ধারিত সময় শেষে ছিল ১-১ সমতা। এরপর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। যেখানে শেষ দিকের গোলে জয় নেয় স্পেন।
সবশেষ ২০১২ আসরের চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে গোল দুটি করেছেন দানি ওলমো ও মিকেল মেরিনো। জার্মানির পক্ষে গোলটি করেন ফ্লোরিয়ান ওয়ার্টজ।
এবারের প্রতিযোগিতায় গ্রুপ পর্ব এবং শেষ ষোলোর ম্যাচগুলোর মিলিয়ে সবচেয়ে সেরা পারফরম্যান্স ছিল এই দুই দলের। যৌথভাবে ইউরোর সবচেয়ে সফল দলও তারা। সর্বাধিক ৩বার করে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছে দুই দল। কোয়ার্টার ফাইনালেই এমন দুই দলের মুখোমুখি লড়াইটিকে অনেকে ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল হিসেবে আখ্যা দিচ্ছিলেন। মাঠের লড়াইয়ের কথা বললে সত্যিকার অর্থেই তেমন মন জুড়ানো এক ম্যাচেরই স্বাদ পেয়েছেন ফুটবল সমর্থকেরা।
পুরো ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে জার্মানি খানিকটা এগিয়ে ছিল। ৫১.৫ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে খেলেছে তারা। প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২৩ শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল ৫টি। অন্যদিকে স্পেন ১৮টি শটের মধ্যে ৬টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল গোলশূন্য সমতায়। বিরতির পর স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় স্পেন। তরুণ তুর্কি লামিনে ইয়ামালের অ্যাসিস্ট থেকে গোলটি করেন দানি ওলমো।
গোল হজমের পর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে জার্মানি। কিন্তু কখনো স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন, কখনো বা আবার ভাগ্য সহায় হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৮৯ মিনিটে ফ্লোরিয়ান ওয়ার্টজ গোল করে স্বাগতিক সমর্থকদের স্বস্তি এনে দেন।
অতিরিক্ত সময়ের লড়াইয়ে খানিকটা এগিয়ে ছিল জার্মানিই। কিন্তু ফুটবলে গোলই তো শেষ কথা। সেই গোল আদায় করে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্পেন।
বিশ্বকাপ, ইউরো বা নেশন্স লিগ মিলিয়ে কোনো টুর্নামেন্টে স্পেনের বিপক্ষে ৩৬ বছর ধরে জয় অধরা জার্মানির। এই অপেক্ষা এখন আরও দীর্ঘ হলো।
আগামী মঙ্গলবার মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্রান্স অথবা পর্তুগালের মুখোমুখি হবে স্পেন।