ক্রিকেটাররা স্বজনহারা মানুষদের জন্য খেলুক: বিজয়
বিসিবিতে নানাভাবে কয়েকদিন আগে হয়ে যাওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের শহীদদের করা হচ্ছে স্মরণ। একটি বড় ব্যানারও লাগানো হয়েছে। অনুশীলনের আগে নীরবতা পালন ও দোয়া করেছেন ক্রিকেটাররা। এবার পাকিস্তান সফরে যাওয়ার আগে ক্রিকেটারদের আবেগঘন আহ্বান জানালেন বাংলাদেশ ‘এ’দলের অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়।
গত জুলাইয়ে শুরু হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো দেশ। দুটি ৪ দিনের ম্যাচ এবং তিনটি ওয়ানডে খেলতে মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে পাকিস্তান সফরে যেতে পারেনি বাংলাদেশ ‘এ’ দল। এবার পাকিস্তান সফরের পরিবর্তিত সূচি আগেই প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
ক্রিকেট বোর্ডের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিজয় বলেন, ‘এই সফরে আমাদের জন্য আবেগের জায়গা আছে। ক্রিকেটের অংশটা তো আছেই। অধিনায়ক হিসেবেই বলেন আর ক্রিকেটার হিসেবে, অবশ্যই দলকে উজ্জীবিত করতে চাই। তারা দেশের জন্য ক্রিকেট খেলুক। স্বজন হারা মানুষদের জন্য ক্রিকেট খেলুক। তাদের পরিবারের জন্য ক্রিকেট খেলুক। যেন সফরটা তারা অসাধারণভাবে শেষ করতে পারে। একটা জয় সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারে।
সবমিলিয়ে দেশে ফিরে বাংলাদেশের সুন্দর চিত্র দেখার অপেক্ষায় থাকা উইকেটরক্ষক ব্যাটার বিজয়ের ভাষ্য, আমি চাইব দেশের পরিস্থিতি আমরা আসতে আসতেই যেন একটা দারুণ পর্যায়ে চলে আসে।
জাতীয় দল নির্ভর হয়ে পড়া দেশের ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় ধরে ছিল না ‘এ’দলের অস্তিত্ব। দেরিতে হলেও বিসিবি বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেছে। বিজয় নিজেও এ ব্যাপারে সকলের দৃষ্টি আকর্ষ করে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
‘জাতীয় দল যখন যাচ্ছে কোনো সফরে, সেটার আগে এ দল কেন যায় না? যাওয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি। তাহলে অনুশীলনের একটা দারুণ সুবিধা থাকছে। যারা খেলবে কিংবা খেলবে না, তাদের একটা প্রস্তুতি হচ্ছে। পারফর্ম করলে জাতীয় দলে আসার সুযোগ আছে। তাতে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়। জাতীয় দলের ২৫-৩০ জনের যে একটা সার্কিট আছে। আমার মনে হয় এটা দারুণ একটা সুযোগ। ’
‘এ’দলের ক্যাম্প হওয়াকে বেশ ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখছেন বিজয়। খেলোয়াড়দের একে অপরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়, নিয়মিত অনুশীলন ও যে কারোর ভালো পারফরম্যান্স একজন খেলোয়াড়ের ভাগ্য বদলে দিতে পারে বলেও তার বিশ্বাস।
‘আমরা একটা ক্যাম্প করেছি, এতে সুবিধা হয়েছে। ক্যাম্পের সুযোগ না পেলে আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতো। আমি ওদের সঙ্গে সিলেটে ক্যাম্প করেছিলাম প্রায় ২০-২২ দিন। তারপর আমরা চট্টগ্রামে ২০-২২ দিনের একটা ক্যাম্প করেছি। তাদের সঙ্গে একটা ওয়ার্ক এথিক্স বলেন কিংবা স্কিল বলেন বিভিন্ন সময়ে আমাদের ভেতর আলোচনা হয়েছে। পরে এসে জানলাম আমি অধিনায়ক হচ্ছি। প্রথম থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমরা কে কীরকম পছন্দ করে, কে কী চাচ্ছে সেগুলো আমরা প্রথমে দেখতে পেরেছি। আমার বাড়তি সুযোগ হয়েছিল ওদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করা, দেখা ও খেলার। বাড়তি চাপ নয়, এটা আমার দারুণ অভিজ্ঞতা হবে যে জ্ঞানটা তাদের কাছ থেকে নিতে পারবো।’
‘সামনে আমাদের অনেক খেলা বাকি। কী হবে সামনে আমরা কেউ জানি না। একটা-দুইটা ইনিংস আমাদের অনেক বড় জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। জীবন যেকোনো সময় পাল্টাতে পারে। আমরা দেখছি যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। আশা করবো, উনাদের অভিজ্ঞতাটা নিয়ে দলের ভারসাম্যের সাথে পরিচালনা করবে আর সেরা পারফরম্যান্স দেবে।’