অধরা শিরোপার খোঁজে বাংলাদেশ

ছবি: বাফুফে

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপাল। ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে আজ বুধবার ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে ৩ টায়।

সাফের বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতাটি অনূর্ধ্ব-১৮, অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২০ এই তিনটি ক্যাটাগরিতে হয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত ২০১৭, ২০১৯ ও ২০২২ সালের আসরে ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু একবারও পারেনি শিরোপা উল্লাস করতে। চতুর্থবার ফাইনালে এসে ট্রফির এই হাহাকার ঘুঁচবে কি? বাংলাদেশ দলের কোচ ও অধিনায়কের কথা শুনে মনে হবে, দলটার মধ্যে অন্তত আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই।

বাংলাদেশ কোচ মারুফুল হক বলেছেন, ‘প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করি আমরা সঠিক ট্র্যাকেই আছি। কঠিন কিছু অর্জনের জন্য যে জার্নিটা থাকে, সেটাতে অনেক উত্থান-পতন থাকে। আমার মনে হচ্ছে সেই উত্থান-পতন পেরিয়ে আমরা আগামীকাল ফাইনালে খেলব।’

আর সেই ফাইনালে নিজেদের দলের হাতেই ট্রফি দেখছেন মারুফুল, ‘প্রতিপক্ষ নেপালের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। তাদের স্কোয়াডটা বেশ ভালো। এই মাঠে খেলেই তারা বড় হয়েছে এবং তাদের উইঙ্গারগুলো খুব ফার্স্ট। এগুলো বিবেচনায় রেখে আমরা যদি আমাদের খেলোয়াড়দেরকে ফুল ফিট অবস্থায় মাঠে রাখতে পারি এবং প্ল্যান অনুযায়ী খেলতে পারি, ইনশা আল্লাহ আমরা ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারব।’

লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা এখন পর্যন্ত দারুণ উজ্জীবিত ফুটবলই খেলেছে। গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল তারা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের কাছে ২-১ গোলে হারে তারা। ফলে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হতে হয়। শেষ চারের লড়াইয়ে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ।

ম্যাচটিতে এগিয়ে যাওয়ার পরও লিড ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। ১-১ স্কোর লাইনে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হলে টাইব্রেকারে নির্ধারণ হয় ম্যাচের ফল। যেখানে ৪-৩ গোলে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এক নম্বর গোলরক্ষক ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান শ্রাবণ চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ায় দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমেছিলেন মোহাম্মদ আফিস। টাইব্রেকারে তিনি দু-দুটি শট ফিরিয়ে দলকে ফাইনালে নিয়ে আসতে বড় ভূমিকা রাখেন। আজও পোস্টের নিচে আসিফই থাকছেন। কারণ শ্রাবণ এ ম্যাচেও খেলতে পারবেন না।

বাংলাদেশ কোচ মারুফুল জানিয়েছেন শ্রাবণ এখন ভালো আছেন। তবে তার ছোট্ট একটা অপারেশন লাগবে। দেশে ফিরে শ্রাবণের ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ফলে ফাইনাল তার খেলা হচ্ছে না। এ ছাড়া কার্যসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারবেন না কামাচাই মারমা আকাই। তবে এই দুজনকে ছাড়াও দল ভালো করার সামর্থ্য রাখে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কোচ।

তবে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন (২০১৫ ও ২০১৭) নেপাল যে বাংলাদেশকে ছেড়ে কথা বলবে না, এটা না বললেও চলছে। একদিকে নিজেদের ঘরের মাঠে খেলা। তার ওপর বাংলাদেশকে গ্রুপপর্বে হারানোর তাজা স্মৃতি। এই নেপালকে ফাইনালের ফেভারিটও বলা যায়। শ্রীলঙ্কাকে ১-০ ও বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের সেরা হয়েছিল নেপাল। এরপর ভুটনাকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে দলটি।

বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ বলছেন, ‘নেপাল অবশ্যই ভালো দল। তারাও ফাইনালে উঠেছে, আমরাও ফাইনালে উঠেছি। স্বাগতিক হিসেবে খেলছে বলে তাদের আলাদা অ্যাডভান্টেজ আছে। সাপোর্টার ও মাঠের অ্যাডভান্টেজ তারা পাবে। এরপরও ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদেরটা করে দেখাব।’ আসিফ যোগ করেন, ‘আমাদের সবাই উজ্জীবিত। ভারতের সঙ্গে জেতার পর মানসিকভাবে আমরা আরও শক্তিশালী হয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য একটাই- চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’