প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে অসাধারণ জয় বাংলাদেশের
প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটিতে সফরকারীদের লজ্জায় ডুবতে হয় কি না, সেই শঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু টাইগাররা ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ায় প্রবল দাপটে। শুধু ঘুরে দাঁড়ানোই নয়, নাজমুল হোসেন শান্তর দল তুলে নিল অসাধারণ এক জয়ও।
মঙ্গলবার ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সুবাদে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো পাকিস্তান।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ ১০ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটি ছিল নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়। শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জয়ের সাফল্যও এল একই সিরিজে।
গতকাল চতুর্থ দিনেই এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের পথটা সহজ হয়ে যায়। দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস ১৭২ রানে থামিয়ে দেয় টাইগার বোলাররা। এতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায়- ১৮৫।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ২৬২ রান। এই পথেই এক পর্যায়ে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল সফরকারীরা। সেখান থেকে লিটন দাসের সেঞ্চুরি ও মেহেদী হাসান মিরাজের দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস অল্পতেই থামিয়ে দেওয়ার পর গতকালই লক্ষ্য তাড়া করতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু আলোকস্বল্পতায় চতুর্থ দিনের খেলা বন্ধ হয় দ্রুত। বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তুলেছিল। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে আজ শেষ দিনে ১৪৩ রান প্রয়োজন ছিল। বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় কিছুটা শঙ্কা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত প্রকৃতি বাংলাদেশের জয়ে বাগড়া দিতে পারেনি।
দিনের শুরুতে দুই ওপেনারকে অবশ্য কাছাকাছি সময়ে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। জাকির ৪০ ও সাদমান ২৪ রানে ফেরেন। তাতে ৭০ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক ৫৭ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেশিক্ষণ টিকেননি শান্ত। ৮২ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন।
এরপর মুমিনুল ও মুশফিক চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ২৬ রান। আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন মুমিনুল। আবরার আহমেদের বলে ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন তিনি। ৪ চারে ৭১ বলে ৩৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
মুমিনুলের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন সাকিব। মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি। আবরার আহমেদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন সাকিব।
৪৩ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ২১ রান করেন সাকিব। মুশফিক ৫১ বলে ১ চারে অপরাজিত ২২ রান করেন।
ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস। সিরিজসেরা মিরাজ।