চিলিকে বিধ্বস্ত করল মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার অবসরের পর প্রথম ম্যাচ, সঙ্গে দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির অনুপস্থিতি। সবমিলিয়ে চিলির বিপক্ষে ম্যাচটি আর্জেন্টিনার জন্য ছিল অন্যরকম ‘পরীক্ষা’। দ্বিতীয়ার্ধের তিন গোলে সে পরীক্ষা দাপটের সঙ্গে উৎরে গেল লিওনেল স্কালোনির দল।
বুয়েন্স আয়ার্সের স্তাদিও মনুমেন্টালে শুক্রবার চিলিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। ২০২৬ বিশ্বকাপের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই পর্বের এই জয়ে জালের দেখা পেয়েছেন মার্ক অ্যালিস্টার, জুলিয়ান আলভারেজ ও পাওলো দিবালা।
আগে থেকেই টেবিলে শীর্ষে ছিল তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ৭ ম্যাচে ছয় জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরো শক্ত করল তারা। ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা উরুগুয়ের চেয়ে আলবিসেলেস্তারা এখন ৫ পয়েন্টে এগিয়ে।
ঘরের মাঠে, চেনা দর্শকের সামনে শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেললো আর্জেন্টিনা। দশম মিনিটে ‘হাফ-চান্স’ তৈরি হয়েছিল। আলভারেজ হয়ে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন রদ্রিগো দে পল, কিন্তু চিলির এক ডিফেন্ডার হেডে ক্রসবারের উপর দিয়ে বল বের করে দেন।
নয় মিনিট পর লাউতারো মার্টিনেজের দারুণ ব্যাকহিল থেকে বল পেয়ে বুলেট শট নিয়েছিলেন ডি পল। কিন্তু বল সরাসরি যাওয়ায় আটকে দেন চিলি গোলরক্ষক আরিয়াস। এরপরই ডি পলের ক্রসে নিকো গঞ্জালেজের হেড ফেরান আরিয়াস।
কোণঠাসা চিলি প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পায় গোলের সেরা সুযোগটি। কিন্তু মাওরিসিও ইসলার ক্রসে মাতিয়াস কাতালানের হেড এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে ফাঁকি দেওয়ার পর পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ গোছালো আক্রমণে ম্যাচের ‘ডেডলক’ খোলে আর্জেন্টিনা। ডান দিক থেকে আলভারেজের আড়াআড়ি ক্রস মার্টিনেজ ডামি করলে চলে যায় সরাসরি মাক অ্যালিস্টারের পায়ে। নিখুঁত প্লেসিংয়ে জাল খুঁজে নেন ২৫ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
এগিয়ে যাওয়ার রেশ থাকতেই ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ কড়া নেড়েছিল তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দরজায়। কিন্তু ডি পলের শট অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। নিকোকে ৫১তম মিনিটে তুলে জিওভানি লো সেলসোকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ।
আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেওয়া কিংবদিন্ত অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ১১ নম্বর জার্সি উঠেছে জিওভানি লো সেলসোর গায়ে। মনুমেন্টালের গ্যালারিতে উত্তরসূরিদের ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন ডি মারিয়াও। ৭৮তম মিনিটে একসঙ্গে তিন পরিবর্তন আনেন স্কালোনি।
আলভারেজ, মাক অ্যালিস্টার ও লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে তুলে আলেসান্দ্রো গারনাচো, দিবালা ও মার্কোস অ্যাকুনাকে বদলি নামান তিনি। মেসির অনুপস্থিতিতে আচমকা দলে ডাক পাওয়া দিবালা খেলতে নামেন মহাতারকার ১০ নম্বর জার্সিতে।
এনজো ফার্নান্দেজের পাস ধরে ৮৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলভারেে। এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের জোরাল শট লাফিয়ে ওঠা আরিয়াসের গ্লাভস জোড়াকে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবারের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়।
শেষ দিকে মিনিটে সতীর্থের লং পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বেরিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাম দিক দিয়ে আক্রমণ শানান গারনাচো। কিন্তু দূরূহ কোণ থেকে তার শট আটকে দেন আরিয়াস।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে শুরুতে ব্যবধান আরো বাড়ান দিবালা। কিছুটা দুরূহ কোণ থেকে এই ফরোয়ার্ডের গতিময় শট আরিয়াসের পাশ দিয়ে খুঁজে নেয় ঠিকানা। বাছাইয়ে ষষ্ঠ ষষ্ঠ জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
নিজেদের পরের ম্যাচে গত কোপা আমেরিকার ফাইনালিস্ট কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে শিরোপাধারী আর্জেন্টিনা। বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবে চিলি।