শুধু ক্রিকেটেই ফোকাস দেওয়া হয়, এটা লজ্জাজনক
সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট ও অন্যান্য খেলায় আকাশ-পাতাল ব্যবধান দেখেন দাবাড়ু ফাহাদ রহমান। এনিয়ে বেশ হতাশ তিনি।
আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদের মতে, ‘ক্রিকেট ছাড়া আমাদের কোনো স্পোর্টসেই সেভাবে ফোকাস দেওয়া হয় না। এটা লজ্জাজনক একটা জিনিস আসলে।’
২১ বছর বয়সী এই তরুণ মনে করেন, ‘আমার মতে সব খেলাই সমানভাবে ট্রিট করা উচিত। একটু হলে ঠিক আছে, কিন্তু আকাশ-পাতাল পার্থক্য হওয়া ঠিক না।’
খুব ছোট্ট বয়সেই নিজেদের দিকে স্পট লাইট টেনে নিতে পেরেছিলেন ফাহাদ। তিনি যখন ফিদে মাস্টার খেতাব পান, তখন তার বয়স ছিল ১০ বছর। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার হন তিনি। তখন তার বয়স ১৬ বছর। এরপর থেকে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার অপেক্ষায় ফাহাদ। কিন্তু সেই অর্থে সুযোগ-সুবিধা না মেলাতেই দীর্ঘ হচ্ছে তার অপেক্ষা।
অনেক চেষ্টার পর এ বছর প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পেয়েছেন। আর দুটি নর্ম পেলে হবে স্বপ্ন পূরণ। কিন্তু ফাহাদ নিজেকে নিয়েই খুশি নন। তার কথায়, ‘আমি এখন বাংলাদেশে রেটিংয়ের দিক থেকে এক নম্বর খেলোয়াড়। এরপরও যতটুকু সাপোর্ট পাওয়ার কথা ততটুকু পাচ্ছি না।’
ফাহাদ বলে যান, ‘সম্প্রতি আমি একটা জিএম নর্ম করেছি। এরপর সাপোর্ট আরও বেশি হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু আমি এক ধাপ এগিয়েছি, আর মাত্র দুই ধাপ এগোতে হবে। কিন্তু সেভাবে সাপোর্ট পাচ্ছি না। নিজে থেকেই অনেক খেলা খেলতে হচ্ছে।’
৪৫তম ফিদে দাবা অলিম্পিয়াডে খেলতে এই মুহূর্তে হাঙ্গেরিতে রয়েছেন ফাহাদ। দেশ ছাড়ার আগে প্রস্তুতি নিয়েও আক্ষেপ ছিল তার কণ্ঠে, ‘প্রস্তুতি তো আমাদের নিজেদেরই নিতে হয়। কারণ আমাদের তো বিদেশি খেলোয়াড়দের মতো কোচ নেই। যতটুকু করা যায়, চেষ্টা করেছি।’
অথচ খেলাটা ক্রিকেট হলে বিষয়টা পুরোপুরি উল্টো হতো। দেশের বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফাহাদের চাওয়া, ‘সংশ্লিষ্টরা যেন সব খেলাকে সমানভাবে ট্রিট করেন। কারণ একটা খেলা নিয়ে কখনো একটা দেশ চলতে পারে না। তাহলে তো আর অলিম্পিক তৈরি হতো না। অলিম্পিক এতগুলো খেলা দিত না।’
ফাহাদ যোগ করেন, ‘সব খেলাকেই সমানভাবে দেখা উচিত। অবশ্যই আপ-ডাউন একটু থাকবেই। তাই বলে পার্থক্য যেন আকাশ-পাতাল না হয়।’