রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের পাতায় এন্দ্রিক
নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচেই স্টুটগার্ট বর্তমান ও রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নদের যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিয়েছে, তাতে জয় পেতে ঘাম ছুটে গেছে লস ব্লাঙ্কোসদের। এর মাঝেও অবশ্য স্বস্তির জায়গা বের করে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে সেবাস্তিয়ান হোয়েনেসের শিষ্যদের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই রিয়ালের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষিক্ত কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে এগিয়ে যায় টুর্নামেন্টের সফলতম ক্লাবটি। এরপর ৬৮তম মিনিটে স্টুটগার্টকে সমতায় ফেরান ডেনিস উনডাভ। তবে ৮৩তম মিনিটে আন্টোনিও রুয়েডিগার এবং যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক ম্যাচেই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন এন্দ্রিক।
ম্যাচের শেষ স্পর্শেই গোল করে আরও একটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন দুদিন আগে নিজের বিয়ের খবর প্রকাশ করা ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড এন্দ্রিক।
ম্যাচের ৮০তম মিনিটে বেলিংহ্যামের বদলি নেমে এন্দ্রিক যখন এই কীর্তি গড়ছেন, সে সময় তার বয়স ১৮ বছর ৫৮ দিন। এই গোলে ২৯ বছর আগে গড়া রাউলের অভিষেক ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি।
১৯৯৫ সালে হাঙ্গেরির ক্লাব ফেরেঙ্কভারোসের বিপক্ষে ৬-১ ব্যবধানে জয়ের দিন অভিষিক্ত হয়েই স্কোরবোর্ডে নিজের নাম তোলেন স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড রাউল গঞ্জালেস। সেদিন তার বয়স ছিল ১৮ বছর ১১৩ দিন। তার চেয়ে ৫৫ দিন কম বয়সেই মাদ্রিদের ক্লাবটির সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হলেন এন্দ্রিক।
দারুণ এই রেকর্ডগড়া গোলটি করার বিষয়ে ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, ভিনিকে (ভিনিসিউস) পাস দেব, কিন্তু পরে দেখলাম, আমি নিজেও শট নিতে পারি। তো শটটি নিলাম, আর তা জালে ঢুকে গেল (হাসি)।’
তার এই গোল নিয়ে ম্যাচ শেষে সতীর্থ রদ্রিগো বলেন, ‘ও যা করল, অন্য কেউ হলে তা করার সাহসই পেত না।’
‘এন্দ্রিককে নিয়ে আমি ভীষণ খুশি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গোল সবসময়ই বিশেষ কিছু।’
গোলরক্ষক ও অধিনায়ক থিবো কোর্তোয়া মজা করে বলেন, ‘(শটটি নিয়ে) ও (এন্দ্রিক) দারুণ আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। তবে গোলটি যদি না হতো, তাহলে ওকে খুন করে ফেলতাম।’
রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ‘ছেলেটির মধ্যে বিশেষ কিছু আছে। ও এমন কিছু করতে পারে যা আর কেউ পারে না।’
‘এমন কিছু গুণ নিয়ে ও জন্মেছে যা স্ট্রাইকারদের আরাধ্য- কার্যকর, ফল নির্ধারণ করার দক্ষতা। সেইসঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী ও জোরালো শট নেওয়ার সক্ষমতা।’
গোলে শট নেওয়া প্রসঙ্গে কোচ বলেন, ‘ওই মুহূর্তে ওদের এক খেলোয়াড়ের বিপরীতে আমাদের তিনজন (ভিনি, রদ্রিগো ও এন্দ্রিক) এগোচ্ছিল। দুই উইংয়ে ভিনি ও রদ্রিগো ফাঁকা ছিল, তাই এন্দ্রিকের জন্য সহজ সমাধান ছিল ওদের দুজনের কাউকে পাস দিয়ে দেওয়া।’
‘কিন্তু ছেলেটির সাহস দেখুন, নিজেই শট নিয়ে বসল। অবশ্য গোলও সে পেয়েছে। তবে ওই পরিস্থিতিতে ওটাই সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল।’
এই গোলের মাধ্যমে রিয়ালের জার্সিতে সব মিলিয়ে দুটি গোল করলেন এন্দ্রিক। প্রথম গোলটি তিনি করেন লা লিগায় নিজের অভিষেক ম্যাচে। ওই গোলটি করেও লিগে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হয়ে গেছেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ২ অক্টোবর ফরাসি ক্লাব লিলের বিপক্ষে। অবশ্য তার আগে ২১, ২৪ ও ২৯ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে এসপানিওল, দেপর্তিভো আলাভেস ও আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলবে তারা। এর মধ্যে প্রথম দুটি ম্যাচ নিজেদের মাঠে খেললেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বিতে মেত্রোপলিতানোয় খেলতে যাবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।