শিরোপায় চোখ রেখে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ভুটান যাত্রা
নেপাল থেকে কয়দিন আগেই সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা নিয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। সেই সাফল্যকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দল আজ (বুধবার) সকালে ভুটান উড়ে গেছে। লক্ষ্য সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরা।
থিম্পুতে ২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সাফের বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে। অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৭ ক্যাটাগরিতে এই প্রতিযোগিতাটি এর আগে ৮ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ খেলেছে প্রতিবারই। তবে শিরোপা জিততে পেরেছে মাত্র দুবার। ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ ক্যাটাগরির আসরে শ্রেষ্ঠত্ব দেখায় বাংলাদেশ। এর বাইরে রানার্সআপ হয় একবার। সেটা গত বছর এই ভুটানেই আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৬ ক্যাটাগরির প্রতিযোগিতায়।
সেবার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই দলের ১১ থেকে ১২ জন সদস্য এবারের প্রতিযোগিতাতেও খেলবেন। ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ নিজেদের মিশন শুরু করবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই। যে ভারতের কাছে গত বছর ফাইনালে হেরেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে আরও আছে মালদ্বীপ। ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে স্বাগতিক ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি করে দল সেমিফাইনালে খেলবে। ২৮ সেপ্টেম্বর সেমিফাইনাল ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে, ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।
ভুটান পাড়ি দেওয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্রস্তুতি ও লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ দল। এবারের দলটিতে কোচ হিসেবে রয়েছেন দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ কোচ সাইফুল বারী টিটু। প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে টিটু বলেন, ‘খুব সম্প্রতি আমাদের অনূর্ধ্ব-২০ দল সাফে সাফল্য পেয়েছে। মেয়েদের দিকে যদি তাকাই, আমরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এরপর বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। সাফের প্রতিযোগিতায় আমরা চাই চ্যাম্পিয়ন হতে।’
সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-২০ দল ও মেয়েদের সাফল্যকে প্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সালও, ‘আমাদের সিনিয়ররা নেপালে গিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওখান থেকে আমরা অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি। অনূর্ধ্ব-২০ দল যেহেতু এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আমি বলব না আমরাও চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসব। তবে আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেস্টা করব। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে ফাইনাল খেলা। এরপর আমরা চ্যাম্পিয়নের চিন্তা করব।’
নিজেদের লক্ষ্য পূরণে প্রথম বাধাই ভারত। এই ম্যাচটাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বাংলাদেশ। কোচ টিটুর কথায়, ‘এবার প্রথম খেলাই ভারতের সঙ্গে। আমার মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি আমরা জেনে যাব যে, কার শক্তি কোন পর্যায়ের।’ অধিনায়ক ফয়সালের কথায়, ‘আমাদের প্রথম ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। এই ম্যাচে ইনশাআল্লাহ ভালো একটা রেজাল্ট করে মালদ্বীপের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হতে চাই। প্রথম ম্যাচ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা জিততে পারলে সেমিফাইনালটা নিশ্চিত হয়ে যাবে অনেকটাই। তাই প্রথম ম্যাচ নিয়েই আপাতত ভাবছি আমরা।’
বাংলাদেশ দল এই প্রতিযোগিতা সামনে রেখে প্রায় ১ মাসের মতো প্রস্তুতি নিয়েছে। ২০ আগস্ট ঢাকাতেই প্রস্তুতি শুরু হলেও পরে দল চলে যায় বিকেএসপিতে। ভুটানে খেলা হবে টার্ফের মাঠে। চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের টার্ফের কথা বিবেচনায় নিয়েই মূলত দলের বিকেএসপিতে প্রস্তুতি নেওয়া। কারণ সেখানে রয়েছে টার্ফের সুবিধা। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভুটানের উচ্চতা বেশি হওয়ায়, এখানে খেলাটা চ্যালেঞ্জিং হবে বাংলাদেশের জন্য। কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেছেন, ‘সেখানে যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নেওয়া যায়, সেটাই আমাদের জন্য ভালো হবে।’
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল টুর্নামেন্টে এখন চারটি শিরোপা বাংলাদেশের দখলে। মেয়েদের জাতীয় দলের সঙ্গে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-১৬ দল এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। সর্বশেষ ছেলেদের অনূর্ধ্ব-২০ দল শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ এশিয়ার। এবার পালা ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের।