অসহায় আত্মসমর্পণে ভারতের কাছে ক্লিন সুইপ বাংলাদেশ
তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-২০তে ভারতের কাছে নিজেদের ইতিহাসে রেকর্ড ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে স্বাগতিকদের কাছে চলমান সফরের সবগুলো ম্যাচ হেরে ক্লিন সুইপ হয়েছে টাইগাররা।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। যা দলটির নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহ। জবাবে ৭ উইকেটে ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশ। টাইগারদের হার ১৩৩ রানে। যা নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
রেকর্ড লক্ষ্য তাড়া করতে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন টানা ব্যর্থতার মাঝে থাকা পারভেজ হোসেন ইমন ও এ ম্যাচে একাদশে আসা তানজিদ তামিম। মায়াঙ্ক যাদবের করা প্রথম বলেই আউট হন ইমন। আরেক ওপেনার তামিমও ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪ রানে আউট হন। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রান যোগ করেন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। ফিফটির কাছে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। টি-২০ ফরম্যাটে রবি বিষ্ণুর ৫০তম শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৫ বলে ৪২ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে বাকিটা সময় একাই লড়েছেন তাওহীদ হৃদয়। ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। নিজের শেষ আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৯ বলে ৮ রান করেন। ভারতের হয়ে বিষ্ণু তিনটি, মায়াঙ্ক দুটি এবং ওয়াশিংটন সুন্দর ও নিতিশ কুমার রেড্ডি একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে আজ টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন অভিষেক শর্মা। ইনিংসে বাংলাদেশের আনন্দ বলতে গেলে সে পর্যন্তই। এরপর সাঞ্জু স্যামসন আর সূর্যের ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপ।
এ ম্যাচ ছিল সাঞ্জুর জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। আর সেটা কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন তিনি! ৪০ বলে সেঞ্চুরি করে দলে নিজের জায়গা তো শক্ত করলেনই, একইসঙ্গে ভারতের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও নিজের করে নেন তিনি। ৪৭ বলে ১১১ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার।
অবশ্য এর আগে দ্বিতীয় উইকেটে সূর্যের সঙ্গে গড়েন ১৭৩ রানের জুটি। যা আরেকটি রেকর্ড। সঙ্গীর বিদায়ের পরপরই ৭৫ রানে আউট হন সূর্য। এরপর হায়দরাবাদে ঝড় তোলেন রিয়ান পরাগ ও হার্দিক পান্ডিয়া। এ দুজনের ৭০ রানের জুটিতে ৩০০ রানের পথে ছিল ভারত। তবে শেষদিকে খেই হারান তারা।
পরাগ ৩৪ ও হার্দিক ৪৭ রানে আউট হন। এরপর আর কেউই বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ২৯৭ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন রিঙ্কু সিং। টেস্ট খেলুড়ে দেশের মাঝে এটাই টি-২০তে সর্বোচ্চ দলীয় রান। আর সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি নেপালের দখলে। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩২৪ রান করেছিল তারা।
রানবন্যার ম্যাচে বাংলাদেশের সফলতম বোলার তানজিম হাসান সাকিব। ৩ উইকেট পেতে চার ওভারে ৬৬ রান খরচ করেন তিনি। এছাড়া তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটি করে উইকেট নেন।