ইংল্যান্ডের কোচ হলেন টুখেল
গ্যারেথ সাউথগেট দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে একের পর এক কোচের ইংল্যান্ড জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার গুঞ্জন চলছিল। এসবের মধ্যে থেকে টমাস টুখেলের ওপরই আস্থা রাখল ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন (এফএ)।
বুধবার (১৬ অক্টাবর) নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে টুখেলকে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানায় এফএ।
২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেড় বছরের চুক্তিতে ইংল্যান্ড দলের দায়িত্ব নিয়েছেন ৫১ বছর বয়সী এই জার্মান কোচ। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন তিনি।
এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বছরে ৫০ লাখ পাউন্ড (৫ মিলিয়ন) পারিশ্রমিকে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের ইউরোর ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে ইংল্যান্ডের কোচের পথ থেকে সরে দাাঁড়ান গ্যারেথ সাউথগেট। তার পর থেকেই নতুন কোচের সন্ধানে ছিল দলটি। এই সময়ে অন্তর্বতীকালীন কোচ হিসেবে উয়েফা নেশন্স লিগে ইংল্যান্ডকে দিশা দেখাচ্ছেন লি কার্সলি। তবে চলতি সপ্তাহে তিনিও জানান, ইংল্যান্ডের জন্য এমন একজন কোচ দরকার যার বড় শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা আছে।
গত কয়েকদিন ধরে থ্রি লায়ন্সদের দায়িত্ব নিতে পেপ গার্দিওলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে গুঞ্জন চলছিল। এর মাঝে টুখেলের নামটি উঠে আসে হঠাৎ করে। তবে গুঞ্জন সত্যি করে তিনিই বসছেন ইংল্যান্ডের ডাগআউটে।
ইংল্যান্ডের তৃতীয় বিদেশি কোচ হচ্ছেন টুখেল। তার আগে ইংল্যান্ডের বাইরে থেকে দলটির দায়িত্ব সামলেছেন মাত্র দুজন- সদ্য প্রয়াত সুইডিশ কোচ সভেন-গোরান এরিকসন ও ইতালির ফাবিও কাপেলো।
তবে ১৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো জাতীয় দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন টুখেল। ৬ বছরের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টেনে ২০০৭ সালে ৩৪ বছর বয়সেই কোচিংয়ে নাম লেখান তিনি। এরপর বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, পিএসজি, চেলসি ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর ম্যানেজার ছিলেন তিনি।
চেলসির দায়িত্ব নিয়ে ইংলিশ ফুটবলের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এই জার্মান। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্লাবটির দায়িত্ব নিয়ে ওই মৌসুমেই চেলসিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ এনে দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন টুখেল। তবে বেশিদিন দীর্ঘায়িত হয়নি তার চেলসি ক্যারিয়ার। পরের বছরই চেলসির দায়িত্ব ছেড়ে জার্মানিতে পাড়ি দেন তিনি।
বায়ার্নের কোচ হয়ে নতুন অধ্যায় শুরুর মৌসুমেই বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হয় তার দল। তবে তার পরের বছর এক যুগের মধ্যে প্রথমবার বুন্দেসলিগা শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয় বায়ার্ন। পাশাপাশি তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করে টুখেলের দল। ফলে বায়ার্ন মিউনিখ থেকেও ছাঁটাই করা হয় তাকে। এরপর থেকে অবসরেই ছিলেন এই কোচ।
এবার জাতীয় দলের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে তার নতুন পথচলা। তবে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়ে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে তাকে।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর আর কোনো বড় শিরোপা জেতেনি ইংল্যান্ড। সাউথগেটের অধীনে পরপর দুবার ইউরোর ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছে তাদের। ফলে দারুণ সব প্রতভাধর ফুটবলারে ঠাসা দলটিকে কীভাবে তিনি পরিচালনা করেন, তা-ই দেখার অপেক্ষায় থাকবে ফুটবল বিশ্ব।