মেজাজ হারিয়ে মাঠ ছেড়ে নিষিদ্ধ তারকা পেসার

মেজাজ হারিয়ে মাঠ ছেড়ে নিষিদ্ধ তারকা পেসার

ক্রিকেট মাঠে মেজাজ হারানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এসব ঘটনা মুহূর্তেই সামলে ফের খেলায় মনোযোগী হন ক্রিকেটাররা। তবে এবার মেজাজ হারিয়ে মাঠ ছেড়ে নিষিদ্ধ হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা পেসার আলজারি জোসেফ।

উইন্ডিজ-ইংল্যান্ডের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ চলাকালে দলপতির সঙ্গে রাগ করে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান আলজারি। ম্যাচ শেষের পর থেকেই আলজারির এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা হয়েছে বেশ। এবার পেলেন শাস্তিও। অপেশাদারি আচরণের কারণে তাকে ২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইসিসি।

পুরো বিষয়টাতে আলজারি কারো সমর্থন পাননি। ক্যারিবীয় কোচ ড্যারেন স্যামি তো ম্যাচের পরপরই এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য আচরণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এবার শাস্তির ঘোষণায় ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ আলজারির এ আচরণকে অপেশাদারি আচরণ বলে উল্লেখ করেছে।   
 
ঘটনাটি ঘটে তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডিংয়ের সময়। ম্যাচের শুরুর কয়েক ওভারের মধ্যেই অধিনায়ক শাই হোপকে কিছু একটা বোঝাচ্ছিলেন পেসার আলজারি জোসেফ। তিনি বোঝাতে চাইছিলেন স্লিপের ফিল্ডারের পজিশন নিয়ে তিনি খুশি নন। কারণ তার বলেই একটি শট পয়েন্টের দিকে চলে যায়। কথা বলার সময়ই নিজের বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন জোসেফ। কিন্তু তাই বলে তিনি যে রাগারাগি করে মাঠ ছাড়বেন, সেটা ভাবতে পারেনি কেউ।
 
একটু পরই ১৪৮ কিমির গতিবেগে একটি বাউন্সার দেন জোসেফ। আর তাতেই ইংল্যান্ডের জর্ডন কক্সের গ্লাভসে লেগে সেই বল ধরা দেয় উইকেটরক্ষকের হাতে। আউট হয়ে যান কক্স। কিন্তু উদযাপন না করে, তখনও অধিনায়কের সঙ্গেই বাকবিতণ্ডায় জড়াতে থাকেন ২৭ বছর বয়সী জোসেফ। তা দেখে সাইড লাইন থেকে কোচ ড্যারেন স্যামি তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন কিছু বলে। তবে তাতে কাজ হয়নি। তিনি নিজের ওভার শেষ করেই ডাগআউটে চলে যান।
 
জোসেফ অবশ্য এক ওভার পরই মাঠে ফেরেন। তবে প্রথম ২ ওভারে ২ রান দেওয়া এ পেসারকে আবার বোলিংয়ে আনা হয় ইনিংসের ১২তম ওভারে। ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১০ ওভার বল করে ৪৫ রান দিয়েছেন তিনি, নিয়েছেন ২ উইকেট।
 
এদিকে জোসেফের এমন কাণ্ড ভালোভাবে নেননি কোচ ড্যারেন সামি। তিনি বলেন, “ক্রিকেট মাঠে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা সবাই বন্ধু হয়ে থাকব। আমি যে সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি, সেখানে এটা মেনে নেয়া যায় না। এই বিষয়ে আমরা অবশ্যই কথা বলব।”
 
ক্যারিবীয় পেসারের সমালোচনা করে সাবেক ক্রিকেটার মার্ক বাচার বলেন, ‘অধিনায়কের সঙ্গে, ক্রিকেটারের সঙ্গে মতের অমিল থাকতেই পারে, তবে যা বিরোধিতা করার বা প্রশ্ন করা, সেটা বন্ধ দরজার মধ্যেই হওয়া উচিত। এভাবে মাঠ ছেড়ে উঠে যাওয়া কখনই উচিত নয়।’
 
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য এর বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নিয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি জানার পর কোচিং স্টাফের সঙ্গে করে পরামর্শ করে আলজারিকে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত জানায় বোর্ডটি। এ প্রসঙ্গে সিডব্লুআইয়ের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট মাইলস বাসকোমবে বলেন, ‘আলজারির আচরণ ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ধরনের আচরণ উপেক্ষা করা যায় না। ঘটনার তীব্রতা আমলে আমাদের সুস্পষ্ট ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।’
 
নিজের আচরণের জন্য অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন আলজারি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে অধিনায়ক শাই হোপ, আমার সতীর্থ ও ম্যানেজমেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভক্তদের কাছেও। আমি বুঝতে পারছি, বিবেচনাবোধের ছোট্ট একটা বিচ্যুতিও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। হতাশার কারণ হয়ে আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত।’