বদলে যাচ্ছে রিয়ালের আইকোনিক মাঠ 'সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর' নাম
সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। এই সময়ের অনেকেই এই নাম শুনলে মনে করবেন রিয়াল মাদ্রিদের স্টেডিয়ামের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, এই নামে রিয়াল মাদ্রিদের ঐতিহাসিক একটা স্টেডিয়াম আছে, কিন্তু এই স্টেডিয়াম যার নামে করা তিনি হচ্ছেন ক্লাবটির ক্লাবের সফল প্রেসিডেন্ট, কোচ এবং ফুটবলার। বলছি, সান্তিয়াগো বার্নাব্যু দে ইয়েস্তের কথা।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যু রিয়াল মাদ্রিদকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সেটা অনেক ইউরোপীয় ক্লাব পারেনি। তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তিনি ক্লাবের জন্যে। একজন খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, পরিচালক এবং সভাপতি হিসাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি তার সর্বোচ্চ দিয়েছেন। রিয়াল মাদ্রিদ আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব। তার এমন অবদানের কথা ভুলেনি ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদ। তারই সম্মানে অল হোয়াইটদের স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর নামে।
তবে বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন ভাসছে রিয়ালের আলোচিত মাঠ 'সান্তিয়াগো বার্নাব্যু'র নাম বদলে যাচ্ছে। ইউরোপের গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে বার্নাব্যুর নাম বদলে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজে হবে রিয়ালের স্টেডিয়ামের নাম। যদিও শেষ পর্যন্ত পেরেজই না করেছেন। স্প্যানিশ গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে সান্তিয়াগোর নতুন নাম হতে যাচ্ছে দ্য বার্নাব্যু।
১৯৫৫ সালের ৪ জানুয়ারি মাদ্রিদের ঘরের মাঠের নাম করা হত সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। ক্লাবটির সাবেক খেলোয়াড়, কোচ ও প্রেসিডেন্ট সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর নামে স্টেডিয়ামের এই নামকরণ করা হয়। তার সময়ে রিয়াল ৬টি ইউরোপিয়ান কাপ, ১৬টি লা লিগা, ৬টি স্প্যানিশ কাপসহ নানা শিরোপা জেতে। ১৯৫৮ সালে বায়ার্ন মিউনিখে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৩ জন মারা গিয়েছিলেন। অধিকাংশ ছিলেন ফুটবলার।
বার্নাব্যু তখন ম্যানইউকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিলেন। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের পর রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি পরা বার্নাব্যুকে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেরা প্রেসিডেন্ট বলা হয়। তিনি ১৯৭৮ সালে ৮২ বছরে বয়সে মারা যান। এদিকে গত বছর নতুনভাবে সেজেছে মাদ্রিদের সান্তিয়াগো। মাঠে বসানো হয়েছে নতুন পিচ, ঘাসের পরিচর্যার জন্য আছে বিশেষ লাইট। বসানো হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি স্কোরবোর্ড। ফুটবল ছাড়াও বাস্কেটবল, টেনিস খেলার সুবিধাও থাকবে এই ভেন্যুতে। পুরো সংস্কার কাজে খরচ হয়েছে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ইউরো।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যু মানেই রিয়াল মাদ্রিদের জন্য রূপকথার মঞ্চ মাদ্রিদের অসংখ্য সুখস্মৃতির সাক্ষী এই ভেন্যু। ১৯৪৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদ প্রথম এ মাঠে খেলতে নেমেছিল। ১৯৮২ বিশ্বকাপের ফাইনাল এই ভেন্যুতেই অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই স্টেডিয়ামকে সম্প্রতি দেয়া হয়েছে নতুন লুক।
প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ইউরোতে শেষ হয়েছে স্টেডিয়ামটির সংস্কার কাজ। বেড়েছে দর্শক আসন সংখ্যাও। পূর্বে ৮১ হাজার হলেও এখন প্রায় ৮৫ হাজার সমর্থক মাঠে বসে দেখতে পারবেন খেলা। বসানো হয়েছে নতুন পিচ। যেকোনো সময় করা যাবে পরিবর্তন। সেই সাথে পিচের ঘাস ঠিক রাখার জন্য মাঠে বসানো হয়েছে বিশেষ একধরনের লাইট।