কোহলির যথেষ্ট শাস্তি হয়নি, বিশ্লেষকদের কাঠগড়ায় আইসিসি

কোহলির যথেষ্ট শাস্তি হয়নি, বিশ্লেষকদের কাঠগড়ায় আইসিসি

বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিন বিধিবহির্ভুত আচরণে ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে বিরাট কোহলির। পাশাপাশি লেভেল ১ ভঙ্গের অপরাধে ভারতের অভিজ্ঞ তারকার আচরণ বিধিতে যুক্ত হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। তবে কোহলি যে শাস্তি পেয়েছেন তা যথেষ্ঠ বলে মনে হয়নি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের। ম্যাচের আবহ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতীয় ব্যাটারের আরও বড় শাস্তি পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অধিনায়ক।

বিরাটের শাস্তির বিষয়ে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলার আগে পন্টিং বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি না এটা কঠোর কোনও শাস্তি। আমি জানি এরকম ঘটনার নজির আগেও রয়েছে। সেখানেও ম্যাচ ফির ১৫-২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের গতকালের ঘটনার গুরুত্বটা বুঝতে হবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘এটা সম্ভবত বছরের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোকের দেখা একটি ম্যাচ। ভাবুন একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এরকম ঘটনা ঘটছে, লোকে ভাবছে এটাই হয়তো ক্রিকেট মাঠে চলে!’

কোহলির মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের আরও দায়িত্ববান হওয়ার কথা জানিয়ে অজি এই সাবেক তারকা বলেন, ‘দুৰ্ভাগ্যবশত যখন এই ধরণের ঘটনা বিরাটের মতো সিনিয়র ক্রিকেটাররা ঘটায় তখন শাস্তির পরিমান পাল্টে যায়। ও একজন রোল মডেল, সে এমন একজন যাকে ক্রিকেট দুনিয়া অনুসরণ করে। সেই কারণে আমি মনে করি এই জরিমানা মোটেও কঠোর শাস্তি নয়।’

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীও মনে করেন, কোহলি বেঁচে গেছেন বড় শাস্তি থেকে, ‘বিরাট যখন এই ঘটনাটা পেছন ফিরে দেখবে, সে ভাববে, যে শাস্তিটা পেয়েছে, সে জন্য সে ভাগ্যবান...মাঠে যে ঘটনা সবার শেষে দেখতে চাই, সেটা হলো শারীরিক সংঘর্ষ। এটা কেউ চায় না। এটা খেলা। কেউ এই সীমানাটা পেরোয় না...প্রায় দেড় যুগ হয়ে গেল সে খেলছে, পেছনে ফিরে এ ঘটনায় তাকালে সে গর্ব অনুভব করবে না।’

এদিকে ভারতের আরেক ধারাভাষ্যকার ভোগলে বলেছেন, ‘সে (কোহলি) ভীষণ ভাগ্যবান। ম্যাচ রেফারি কিছুটা নরমভাবে বিষয়টি দেখেছেন বলে মনে করি। আমি অবশ্য সবচেয়ে বাজে কিছুর শঙ্কায় ছিলাম।’

মূলত অস্ট্রেলিয়া-ভারতের বক্সিং ডে টেস্টের শুরুর দিনই বিতর্কিত ঘটনাটির জন্ম দেন তিনি। ইচ্ছেকৃতভাবে অস্ট্রেলিয়ার অভিষিক্ত তরুণ ব্যাটার স্যাম কনস্টাসের কাঁধে ধাক্কা মেরেছেন। ঘটনাটা ঘটেছে মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিন দশম ওভার শেষে।  ওপেনিং পার্টনার উসমান খাজার সঙ্গে কথা বলার জন্য যাচ্ছিলেন কনস্টাস। ঠিক তখনই ইচ্ছে করে তার কাঁধে ধাক্কা মেরে যান কোহলি। মাঠে কোহলির এমন আগ্রাসী আচরণ নতুন কিছু নয়। কিন্তু ১৯ বছর বয়সীর সঙ্গে এমনটা করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তো দুয়োর শিকারও হয়েছেন। 

আইসিসির আচরণ বিধি অনুযায়ী কোনও খেলোয়াড়ের সঙ্গে অনুচিত শারীরিক সংস্পর্শের ব্যাপারে বিধি নিষেধ আছে। কোহলি অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি। তার শাস্তি প্রস্তাব করেছেন ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। এই ম্যাচে অনফিল্ড আম্পায়ার জোয়েল উইলিসন ও মাইকেল গফ। তৃতীয় আম্পায়ার বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ ও চতুর্থ আম্পায়ার শন ক্রেইগ।