নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু পাকিস্তানের

হার দিয়ে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করল স্বাগতিক পাকিস্তান। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নবম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬০ রানে হেরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২০ রান করে নিউজিল্যান্ড। উইল ইয়ং ১০৭ ও টম লাথাম অপরাজিত ১১৮ রান করেন। জবাবে ২৬০ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।

করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪৫ বলে ৩৯ রানের সূচনা করেন দুই ওপেনার ইয়ং ও ডেভন কনওয়ে। অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে কনওয়েকে ১০ রানে বোল্ড করে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পাকিস্তানের স্পিনার আবরার আহমেদ।

কনওয়ের বিদায়ে ক্রিজে আসেন ইনফর্ম কেন উইলিয়ামসন। পরের ওভারে পাকিস্তান  পেসার নাসিম শাহর বলে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দেন ২ বলে ১ রান করা উইলিয়ামসন।

চার নম্বরে সুবিধা করতে পারেননি ড্যারিল মিচেলও। পাকিস্তানের আরেক পেসার হারিস রউফের শিকার হবার আগে ২৪ বলে ১০ রান করেন মিচেল। এতে ৭৩ রানে ৩ উইকেট পতনে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড।

তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে ভালো অবস্থায় নেন ইয়ং ও উইকেটরক্ষক টম লাথাম। ২৩তম ওভারে দলে রান ১শ এবং ৩১তম ওভারে দলের রান দেড়শ’তে নেন তারা।

৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়ং। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করলেন তিনি।

দলের রান ২শ’ হবার আগেই পেসার নাসিম শাহর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন ১০৭ বলে সেঞ্চুরি করা ইয়ং। ১১৩ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০৭ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি। লাথামের সাথে ১২৬ বলে ১১৮ রান যোগ করেন ইয়ং।

দলীয় ১৯১ রানে ইয়ং ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের রানের গতি বাড়ান ক্রিজে সেট ব্যাটার লাথাম ও গ্লেন ফিলিপস। এতে ৪৫ ওভারেই আড়াইশ’তে পা রাখে নিউজিল্যান্ড।

৪৭তম ওভারের তৃতীয় বলে ১৫৩তম ওয়ানডেতে অষ্টম শতক পূর্ণ করেন লাথাম। এজন্য ৯৫ বল খেলেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। এই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরিতে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ইয়ং ও লাথাম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে একই ইনিংসে পঞ্চমবারের মত এটি জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড।

লাথামের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় বইয়ে দেন ফিলিপস। মাত্র ৩৪ বলে ওয়ানডেতে পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আউট হবার আগে পঞ্চম উইকেটে লাথামের সাথে ৭৪ বলে ১২৫ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন ফিলিপস। এরমধ্যে শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ডকে ১১৩ রান এনে দেন লাথাম-ফিলিপস। এতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২০ রানের বড় সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।

৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৬১ রান করেন ফিলিপস। ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৪ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন লাথাম।   

পাকিস্তানের দুই পেসার নাসিম ৬৩ রানে এবং হারিস ৮৩ রনে ২টি করে উইকেট নেন।

জবাবে নিউজিল্যান্ডের পেসার উইল ও’রুর্কের জোড়া আঘাতে ২২ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ওপেনার সৌদ শাকিল ৬ ও তিন নম্বরে নামা অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ৩ রানে আউট হন।

শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টায় তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন আরেক ওপেনার বাবর আজম ও ফখর জামান। জুটিতে ২৪ রান অবদান রেখে অফ-স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে বোল্ড হন ফখর।

চতুর্থ উইকেটে বাবরের সাথে জুটি বেঁধে দ্রুত রান তুলতে থাকেন সালমান আগা। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ বলে ৪২ রান তুলে বিদায় নেন সালমান। এরপর তায়েব তাহির ১ রানে ফিরলে ৫ উইকেটে ১২৮ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান।

এক প্রান্ত আগলে ওয়ানডেতে ৩৫তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন বাবর। ইনিংস বড় করার চেষ্টায় বেশি দূর যেতে পারেননি বাবর। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার স্যান্টনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৬৪ রানে আউট হওয়ার আগে ৯০ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন বাবর।

দলীয় ১৫৩ রানে বাবর আউটের পর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হন খুশদিল শাহ। ৩৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন তিনি। তবে দলীয় ২২৯ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে খুশদিল ফিরলে পাকিস্তানের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত ১৬ বল বাকি থাকতে ২৬০ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।

১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৯ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন খুশদিল।

নিউজিল্যান্ডের ও’রুর্ক ৪৭ রানে এবং স্যান্টনার ৬৬ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।