ইংল্যান্ডকে বিদায় করে স্মরণীয় জয় আফগানিস্তানের
ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানের রেকর্ড সেঞ্চুরি ও আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের দারুণ বোলিং নৈপুন্যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফির নবম আসর থেকে বিদায় নিল ইংল্যান্ড। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তনের কাছে ৮ রানে হেরেছে ইংলিশরা।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল তারা। ফলে ২ ম্যাচে জয়হীন থাকায় আসর থেকে বিদায় ঘটলো জশ বাটলারের দলের। ২ ম্যাচে একটি করে জয় ও হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে থেকে সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকল আফগানিস্তান।
লাহোরে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড পেসার জোফরা আর্চারের তোপে ৩৭ রানেই ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ (৬), সেদিকুল্লাহ আটাল(৪) ও রহমত শাহকে (৪) রানে শিকার করেন আর্চার।
আফগানিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরাতে চতুর্থ উইকেটে শক্ত হাতে হাল ধরেন ইব্রাহিম ও অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি। ইংল্যান্ড বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ১২৪ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন তারা। জুটিতে ৩টি চারে ৪০ রান করে স্পিনার আদিল রশিদের বলে বোল্ড হন শাহিদি।
শাহিদি ফেরার পর আফগানিস্তানের রানের চাকা সচল রাখেন ইব্রাহিম ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ৩৭তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইব্রাহিম। এজন্য ১০৬ বল খেলেন তিনি।
দলের রান ২শ পার করে সাজঘরে ফিরেন ওমরজাই। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩১ বলে ৪১ রান করেন তিনি। ইব্রাহিমের সাথে ৬৩ বলে ৭২ রান যোগ করেন ওমরজাই।
দলীয় ২১২ রানে ওমরজাই আউটের পর ইংল্যান্ডের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালিয়েছেন ইব্রাহিম ও মোহাম্মদ নবি। আর্চারের করা ৪৪তম ওভারে ২০ এবং স্পিনার জো রুটের করা ৪৭তম ওভারে ২৩ রান তোলেন তারা।
শেষ ওভারের প্রথম বলে ইব্রাহিমকে থামান স্পিনার লিয়াম লিভিংস্টোন। ১২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১৪৬ বলে ১৭৭ রান করেন ইব্রাহিম। এ ইনিংসের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড গড়েন ইব্রাহিম। চলতি আসরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের বেন ডাকেটের গড়া ১৬৫ রানের রেকর্ড ভাঙেন আফগানিস্তানের এ ব্যাটার।
এছাড়াও ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ডও গড়েন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা ইব্রাহিম।
শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন নবি। তার আগে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৪ বলে ৪০ রান করেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে ইব্রাহিম ও নবির ৫৫ বলে ১১১ রানের ঝড়ো জুটিতে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৫ রানের পাহাড় গড়ে আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের আর্চার ৩টি ও লিভিংস্টোন ২টি উইকেট নেন।
জবাবে ৩০ রানে ২ উইকেট পতনের পর দলকে লড়াইয়ে ফেরান বেন ডাকেট ও জো রুট। ৬৮ রানের জুটির গড়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ৪টি চারে ৩৮ রানে ফিরেন ডাকেট।
দলীয় ৯৮ রানে ডাকেট ফেরার পর ইংল্যান্ডকে সামনে টেনে নেন রুট। অধিনায়ক জশ বাটলারের সাথে পঞ্চম উইকেটে ৮৩ ও জেমি ওভারটনের সাথে সপ্তম উইকেটে ৪৩ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।
এরমধ্যে ওয়ানডেতে ১৭তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করে দলীয় ২৮৭ রানে আউট হন রুট। ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ১১১ বলে ১২০ রান করেন ডান-হাতি এই ব্যাটার।
রুট ফেরার সময় জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার পড়ে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ২৫ বলে ৩৯ রান। শেষ ওভারে ১৩ রানের সমীকরণও মেলাতে পারেনি ইংল্যান্ড। ১ বল বাকি থাকতে ৩১৭ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা।
আফগানিস্তানের ওমরজাই ৫৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন। ম্যাচ সেরা হন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম।